প্রকাশিত:
৩০ জুলাই ২০২৩, ১৮:০৬
জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এক রোগীর ২৩ লাখ টাকার উপরে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই রোগীর স্ত্রী বাদী হয়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ করেন। তবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ওই রোগী। আর প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছেন অসহায় পরিবার। প্রতারণার শিকার রোগী উপজেলার সারাবাড়ী এলাকার মৃত আব্দুল হামিদ বেপারীর ছেলে মিজানুর রহমান।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মিজানুর দীর্ঘদিন ধরে লিভার সমস্যার রোগে আক্রান্ত হয়ে তার লিভারটি নষ্ট হয়। এতে হতাশায় ভুগছেন তিনি ও তার পরিবার। এ দেশের চিকিৎসকরা তাকে ভারতে নিয়ে লিভার অপারশেনের পরামর্শ দেন। এ সুযোগে তার চাচী নাসরিন মুক্তির মামা দালাল বাবলু মিয়া প্রতারণার ফাঁদ পাতেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার থানার দেলদুয়ার এলাকায়। পরে ওই দালাল বাবলু, নাসরিন মুক্তি, ইয়াছিন আলী, ফিরোজ, তানভীর ও খাজা মোহাম্মদ আলী মিলে ভারতে লিভার অপারশেনের জন্য তার সঙ্গে সাড়ে ২৮ লাখ টাকা চুক্তি হয়। এর মধ্যে ভারতে চিকিৎসাসহ যাবতীয় খরচের দায়বার নেন ওই দালাল। নিজের জীবন বাঁচাতে ব্যক্তিগত গাড়ি ও জমি বিক্রি করে মিজানুর।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সফিপুর চাচা-চাচীর বাসায় বসে চুক্তি অনুয়ায়ী ১ম ধাপে সাড়ে ৬ লাখ টাকা নেয় দালাল চক্র। এরপর চক্রটি ২য় ধাপে ১২মে ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা নেয়। গত ১৫মে ওই রোগী ও তার স্ত্রীকে নিয়ে ভারতের দিল্লিতে নিয়ে যান দালাল বাবলু। সেখানে নিয়ে একটি হাসপাতালে ভর্তি এবং থাকার ব্যবস্থা করেন ওই দালাল। এরপর ৩য় ধাপে ১৫জুন ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। সর্বমোট ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে বাকী টাকা অপারেশনের পর নিবেন বলেও জানায় দালাল বাবলু।
এমনকি ওই দালাল বাবলু হাসপাতালে কোনো টাকা জমা না দিয়ে কৌশলে দেশে চলে আসে। অপর দালাল তানভীর সেখানে গেলেও শিরিন নামে আরেকজনকে দায়িত্ব দিয়ে কৌশলে চলে আসেন। ওই শিরিনকেও আরো দেড় লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন অসুস্থ মিজানুর। তখন ওই শিরিন তাকে আরো ২১ হাজার ডলার জমা দিলে তার অপারেশন হবে জানালে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন রোগীসহ তার পরিবার। আর টাকা না থাকায় চিকিৎসা না নিয়ে গত ১৭জুলাই মাসে তারা দেশে ফিরেন মিজানুর। এখন তিনি কখনো হাসপাতাল আবার কখনো বাসায় জীবন-মত্যুর সন্ধিক্ষণে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আর প্রতারিত হয়ে সর্বস্বহারা পরিবারটি। লেখাপড়াসহ জীবন-জীবিকা নিয়ে অনিশ্চতায় রয়েছে শিশু দুই ছেলেও। এ ঘটনায় গত ২৩ জুলাই তার স্ত্রী নাহিদা সুলতানা বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
কালিয়াকৈর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ রাফসান মোল্লা জানান, এ ঘটনায় থানায় অভিযাগ হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন: