প্রকাশিত:
১০ অক্টোবর ২০২৪, ১৪:৪১
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বারবার নির্যাতিত ও কারাবরণকারী এবং ফ্যাসিবাদী বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের করিডোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আমার দেশের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বাংলাদেশ জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট ও শতাধিক শিক্ষার্থীবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, যে কুষ্টিয়া শহর থেকে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে রক্তাক্ত করে বের করে দেয়া হয়েছিল সেই কুষ্টিয়া শহরেই আজ তিনি মাথা উঁচু করে সে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করতে এসেছেন। এর চেয়ে গর্বের আর কী হতে পারে। যে রক্ত ও প্রাণের বিনিময়ে আমরা বাংলাদেশকে ফ্যাসিস্ট মুক্ত করতে পেরেছি, সেই স্বাধীনতা আমাদের টিকিয়ে রাখতে হবে। মাহমুদুর রহমান মানেই ন্যায় ও সততার নাম। সত্যের পক্ষে কথা বলে তিনি যেভাবে বারবার হামলা মামলার শিকার ও রক্তাক্ত হয়েছেন তা আমাদের জন্য উদাহরণস্বরূপ।
দৈনিক আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের ৫ই আগস্ট এক অভূতপূর্ব ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লব ঘটেছে যার ফলে বাংলাদেশের মানুষের ঘাড়ে ১৬ বছর ধরে চেপে বসা এক জালিম শাহির পতন হয়েছে। এই সরকার ছিল একটি ফ্যাসিস্ট সরকার, দেশবিরোধী সরকার ও ইসলামবিরোধী সরকার। এ সরকার পরিচালিত হয়েছে দিল্লি থেকে। এর একটি সংক্ষিপ্ত প্রমাণ হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে এসেছিলেন দিল্লি থেকে, আবার ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের ক্ষমতাচ্যুত হয়ে কাপুরুষের ন্যায় পালিয়েও গেছেন সেই দিল্লিতেই। যে প্রভু তাকে দিল্লি থেকে বাংলাদেশে পাঠিয়েছিল বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য, ইসলামকে ধ্বংস করার জন্য সেই প্রভুর কাছেই তিনি পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, এই সরকার খুবই স্লো এটা তাদের প্রবলেম। এখনো আমরা ভারতের কাছে জোরালো দাবি করতে পারি না যে হাসিনাকে ফেরত দিয়ে দাও বাংলাদেশে, কোন অধিকারে হাসিনা ভারতে বসে আছে। ভারত এখনো হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয় নাই। রাজনৈতিক আশ্রয় না দেওয়ার পরেও কোন অধিকারের হাসিনা এখনো ভারতে থাকে। সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে হাসিনা ভারতে বসে আছে এবং বাংলাদেশের যে শত শত মন্ত্রী এমপি ভারতে বসে আছে, এর বিরুদ্ধে আমাদের জোরালো আওয়াজ তুলতে হবে। ভারতীয় হাইকমিশনকে ডেকে বলতে হবে যে হাসিনা অপরাধী। আজকে আমার মামলার এক নম্বর আসামি হাসিনা। মামলা করার পর আমি দাবি জানাবো ভারত থেকে হাসিনাকে এরেস্ট করে বাংলাদেশে এনে বিচার করতে হবে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগ দোসর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। আমি এই সরকারকে ৭দফা দিয়েছি। তন্মধ্যে এটা অন্যতম। আমি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, এই ৭দফার সময়সীমা আগামী রোববার শেষ হবে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্লাটফর্মকে বলে দিয়ে যাচ্ছি, এই দাবিগুলোর সমর্থনে আপনারা আন্দোলনে শুরু করবেন। যতদিন না ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে ততদিন আপনারা আপনাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন। এটার মাধ্যমে আপনাদের মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে। আপনাদের মুক্তি পেতে হলে প্রথমেই ছাত্রলীগের দানব থেকে মুক্তি পেতে হবে। তারা কথায় কথায় আমাদের মৌলবাদী বলে, মুসলমানদের জঙ্গিবাদী বলে। বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি সংগঠন থাকলে এই ছাত্রলীগই আছে। এই সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। এদের থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনারা সোচ্চার হতে হবে এবং আমি নিজেও ঢাকায় মাঠে নামব।
আগে কথা বলতো না, কিন্তু এখন প্রতিটি কাজে ভুল ধরতে ব্যস্ত এমন গোষ্ঠী সম্পর্কে তিনি বলেছেন, আপনারা কথা বলতেছেন না, তাদেরকে সুযোগ দিচ্ছেন, তাই সুবিধাবাদী দল সরব। আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে হবে যে আগের সরকার কীরকম ছিল এবং তাদের কর্মকাণ্ড কী ছিল তা সোশ্যাল মিডিয়ায় বুদ্ধিবৃত্তিক প্রচার করতে হবে। বর্তমান সরকার ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এখনও অর্থবহ পদক্ষেপ নিতে পারেননি। দেখতেছেন না? আওয়ামীলীগ নেতাদের আটক করে দুইদিন পর জামিন দিয়ে দিচ্ছে, তাহলে তাদের জামিন দিতে হলে কোন যুক্তিতে আটক করা হচ্ছে? সরকারকে আরও জোড়ালো পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান তিনি।
মন্তব্য করুন: