প্রকাশিত:
২১ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:১৫
উচ্ছেদ অভিযানে এসে কর্মকর্তারা আক্রমণের মুখে পড়লে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। সোমবার ২১ অক্টোবর দুপুরে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযানে এসে কর্মকর্তারা আক্রমণের মুখে পড়লে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
রেলওয়ে মসজিদের দেয়াল ভাঙা হচ্ছে, এমন অভিযোগ এনে বিক্ষুব্ধ লোকজন কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করেন। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা আবদুস সোবহানসহ রেলওয়ে কর্মকর্তারা সেখানে ছিলেন। সেখানে রেলওয়ে থানা-পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। শুরুতে রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। যদিও সেখানকার অস্থায়ী স্থাপনাগুলো আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
বেলা ১টার দিকে অবরুদ্ধ বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা আবদুস সোবহানকে সেনাবাহিনী-পুলিশ উদ্ধার করে রেলওয়ের মূল ভবনে নিয়ে যান। হামলায় জড়িত অভিযোগে এম এ রাকিব তালুকদার (৪৫) নামের এক দোকানিকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। তিনি নগরের কৃষ্টপুর আলিয়া মাদ্রাসা এলাকার বাসিন্দা। স্টেশন এলাকায় তাঁর পানের দোকান আছে।
আবদুস সোবহান বলেন, দেড় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা আজ ভাঙার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা ভুল বুঝে আক্রমণ করেন। তাঁরা ভেবেছিলেন, মসজিদ ভাঙতে চাচ্ছি। লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়ে ভুল–বোঝাবুঝির কারণে এমনটি হয়েছে। যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন এবং যাঁরা এত দিন অবৈধভাবে এখানে ছিলেন, আমার মনে হয় তাঁরাই এতে অংশ নিয়েছেন।’
ময়মনসিংহ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই অমিত হাসান বলেন, মসজিদের দেয়ালে শুরুতেই ভাঙচুর শুরু করায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে আজকের মতো উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, খননযন্ত্র নিয়ে শুরুতেই রেলওয়ে স্টেশন মসজিদঘেঁষা পূর্বের ভাঙা স্থাপনার অংশে পুনরায় ভাঙচুর শুরু করা হয়। কয়েক মিনিট ভাঙার পর মসজিদের অংশ ভাঙা হচ্ছে দাবি করে অভিযান বন্ধের দাবি জানান বাসিন্দারা। এ সময় উত্তেজিত জনতা হামলা করেন। ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে অভিযানে আসা কর্মকর্তা ও পুলিশ পাশের একটি ভবনে নিরাপদ আশ্রয় নেন। এতে ইটপাটকেল এ কয়েকজন আহত হন। বিক্ষুব্ধ লোকজন ইটপাটকেল ও বাঁশ নিয়ে খননযন্ত্রটি ভাঙচুর ও চালককে মারধর করেন।
খবর পেয়ে দুপুর ১২টার পর সেনাসদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রেলওয়ে মসজিদের মাইকে ইমাম রফিকুল ইসলাম ঘোষণা দেন, আমরা গত রাত থেকে কর্মকর্তাদের সব কাগজপত্র দেখিয়েছি। কিন্তু তার পরও আমাদের মসজিদে ভাঙচুরের চেষ্টা হয়েছে, তা দুঃখজনক। কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে, মসজিদ ভাঙা হবে না। আপনারা সবাই ঘরে ফিরে যান।’
মন্তব্য করুন: