প্রকাশিত:
২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৬:১৯
যেদিন কোলজুড়ে তুই এলি
পাড়ার সবাই হেসে কুটিকুটি,
বাড়িতে তোর আগমনে মহাযজ্ঞ,
আমি দেখছিলাম তোর অস্পষ্ট চোখে,আমার প্রসন্ন ভাগ্য।
ছেলে হয়েছে,ছেলে হয়েছে,
মহা রব পড়ে হেথায়-হোথায়,
মিঠামুখ করে পুলকিত ভরে,
সেকি এক মহানন্দ,
আমার দুয়ারায়!
কত আদরে, কত যে যতনে,
রাখিনু মাথায় করি।
মাটিতে রাখিনি বুকে জড়িয়ে
রেখেছি আগলে ধরি।
সবটুকু সুখ তোরে ঘিরে মোর
জীবন হলেও বিপন্ন,
পরিশ্রম যত,সহি হাসি মুখে
তোর এ হাসির জন্য।
সামর্থ মোর যা কিছু,
তবু দিয়েছি তার অধিক ,
আগে পিছে কিছু ভাবিনি
তো, ছিল সংসারে টানাটানি।
এতটুকু ব্যথা না পাস যেন
চেয়েছি তা আপ্রাণ,
চাওয়ার আগেই দিয়েছি
যে তোকে,হাজির করেছি প্রাণ।
নিজে না খেয়ে অন্ন তুলেছি
তোর সূক্ষ্ম মুখে।
নিজের হাসি দেখেছি সদা
তোর মনভরা সুখে।
বড় হয়ে গেলি,নিজে বুঝে নিলি
আপন জগতে হারায়ে।
বাবা- মা আজ বড়ই বোঝা,
চাস শুধু আজ সরাতে।
চাকরি হলো,বাড়ি কম্পি়লিট
এসি গাড়ি আর সাথে।
যৌবনে তোর সঙ্গীনি কে হবে?
নিজেই নিলি তা ভেবে,
অভিভাবক আর নেই দরকার
সুখ নিবি তুই কিনে।
আমার দোয়া সঙ্গে রবে
জেনে রাখিস মনে।
মাকে ছাড়া চলতো না তোর
সবই এখন স্মৃতি,
মায়ের খবর রাখতে যে তোর
সময় খুব সীমিত।
ব্যস্ত তুই,ব্যস্ত যত
তার চেয়ে দেখি বেশি,
ব্যস্ত থাকার গল্প
আজ তোর থেকে আমি শিখি।
নতুন কিছুর মাঝে বাবা-মা
পুরাতনই হয় বটে,
নতুন সবই,বাপ-মা শুধু
বেমামান সংসারেতে,
পরের মেয়েরে নিজের করি,
তবু মায়ায় বাঁধতে নারি
অভিযোগ শত মাথা পেতে নিই
নিজেরই অদৃষ্ট ভাবি।
অবশেষে একদিন,
এলো যে সময় আমার
বিদায়ের দিন।
রেখে এলি মোরে নতুন ঠিকানায়,
অপরিচিত সব, তোরে সেথা নাহি পাই।
চোখের জলে সিক্ত হলো যে আঁখি
তবুও ভাবি,বাছা তুই স্বস্তি পেলি নাকি!
জীবন প্রবাহে জটিল ঘটনাক্রম,
শেষ সময়ে ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম।
মন্তব্য করুন: