প্রকাশিত:
১৯ নভেম্বর ২০২৪, ২০:২১
কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে নিহত ২৪ জন সেনার দেহাবশেষ ফিরিয়ে নিচ্ছে জাপান। জাপানের একটি বিশেষজ্ঞ দল সমাধি খনন ও যাচাই-বাছাই শেষে দেহাবশেষ নিতে কাজ করছে । জাপান ও কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন যৌথভাবে কাজ করছে।
৮১ বছর পর কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি (যুদ্ধসমাধি) থেকে ২৪ জন জাপানি সেনার দেহাবশেষ সমাহিত করার সরিয়ে নিজ দেশে নিয়ে যাচ্ছে জাপান। জাপান থেকে ৭ সদস্যের একটি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল ওই ২৪ জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছেন। নিহত সেনাদের দেহাবশেষসহ এসব সমাধিতে পাওয়া স্মৃতিচিহ্নও নিয়ে যাওয়া হবে। এতে তাঁদের সহায়তা করছে বাংলাদেশ সরকার।
কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম পাশে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় অবস্থিত ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত বিশ্বের ১৩টি দেশের ৭৩৭ জন সৈনিককে এখানে সমাহিত করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের টিম লিডার ইনোওয়ে তাতসুকায়ি জানান, আপাতত সমাধিগুলো খুঁড়ে কি পাওয়া যায় তা সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এরপর সেগুলোর ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা হবে। যেসব সৈনিকদের মরদেহ এসব সমাধিতে আছে তাদের পরিবারের জন্য সান্ত্বনা হিসেবে দেহাবশেষ নেওয়ার এই উদ্যোগ বলে জানান তিনি।
দেহাবশেষ নিয়ে যাওয়ার কাজের প্রধান আর্কিওলজিস্ট ফ্রান্সিস মাইকেল বলেন, ‘খুব সাবধানতার সাথে এখন মাটি খুঁড়ে স্মৃতিচিহ্নগুলো সংরক্ষণ করছি আমরা। যতটুকু সময় আমরা চেয়েছি তার চেয়ে বেশি সময়ও লাগতে পারে। আসলে পুরো কাজ শেষ হবার পর বলতে পারব, এখান থেকে আমরা কী পেলাম।’
কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন বাংলাদেশের কুমিল্লা ওয়ার সিমেট্রির মুখপাত্র লে. কর্নেল (অব) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতীকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘জাপান সরকার ২০১৩ সালে আমাকে তাদের দূতাবাসে ডেকেছিল এই ২৪ জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে ওই সময়ে সেটি সম্ভব হয়নি। গত বছর থেকে তারা বিষয়টি নিয়ে আবারও যোগাযোগ করে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে জাপান সরকার আমাদের সরকারের কাছে চিঠি লেখে এবং কমনওয়েলথের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে এই কাজ শুরু করেছে। এখানে জাপানের পক্ষ থেকে সাতজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন, যাঁরা এ কাজে অত্যন্ত দক্ষ। এই সমাধিগুলো ৮১ বছরের পুরোনো। এরই মধ্যে আমরা ১০ জনের দেহাবশেষ সমাধি থেকে উত্তোলন করতে পেরেছি।’
মন্তব্য করুন: