প্রকাশিত:
২০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৯
গাছপালার ( ছোট, বড় খেজুঁর গাছ বিভিন্ন রকমের ঝোপঁ গাছের আড়ালে) খানিক দূর থেকে স্পষ্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে একটা ছোট্ট ঘর সবটা ঝাপসা ভাসলেও দূর থেকে টিনের মধ্যে হালকা রোদের ঝাপটানো, দুই একটা পাখির কিচিরমিচির এবং দরজা খোলার শব্দ। চাদঁর জড়িয়ে পুরো শরীরে, বের হয়ে আসছে একজন মধ্যবয়স্কা কোমলমতি নারী।
নিলয় অনেকক্ষণ ধরে বগলেে নিচে তৃতীয় শ্রেণির কয়েকটা বই নিয়ে তাড়াহুড়ো করে আসছে এবং সবগুলো দৃশ্যপট চোখের কোণে ধারণ করছে। চেহেরায় যতটা শান্তশিষ্ট নিলয়ের ব্যবহার আবয়বে ততটাই দূরন্তপনা, পায়ে কাদাঁমাখানো কুয়াশারর বিন্দু বিন্দু পানি দিয়ে পুরা রাস্তার ধুলো-বালি গুলো কাদাঁময় হয়ে গেছে। কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল সবকিছু মিলিয়ে নতুনত্বের ছোঁয়া। শীতের আগমন কোণদিক ভেদে ঠান্ডা হিমালয়ের হাওয়া । গাছের পাতা থেকে টুপটুপ পানি পড়ছে ( কুয়াশার পানি) । সূর্য মামা উকি দিচ্ছে আবার লুকিয়ে যায়। প্রকৃতির একটা গতি নিয়ে নিত্যমাফিক কাজ করছে। নিলয় যেন হাপ ছেড়ে দিলো এমনভাবে যেন তার গন্তব্যে পৌঁছে গেল। দৌড়েঁ এসে জড়িয়ে ধরে বললো মা এসে গেছি । চাঁদর টা গা থেকে সরিয়ে রেখে বললো এভাবে হাঁপাচ্ছিস কেন বইগুলো ভিতরে রেখে আয়। আজকে মাস্টারমশাই কি পড়ালো রে তকে। মাস্টার মশায়ের তো কোন খোঁজ নাই আজকাল বলিস একদিন আসতে শীতের পিঠা খেয়ে যেতে৷ পড়নে নীল শাড়ি আচঁল টা বেগুণি রঙ হাতে শাখা ফালা ভর্তি, চুলের গোড়ায় কপালে ভর্তি সিঁদুর লাল টিপ। চুরির ঝন ঝন শব্দে হাঁড়িপাতিল গুল একসাথে করে কিছু চালের শুকনো গুড়ো নিয়ে বসেছে সামনে।
গায়ের রং এর সাথে চালের রং ব্যাপক পার্থক্য মনে হয় শরীর থেকে রক্ত পড়ছে। তক্ষুনি মা ডাক দিয়ে বললো নিলয় বাবা পিঁড়ি টা নিয়ে আয়তো বাবা.. উপর দিয়ে তো বসতে পারিনা পা ব্যাথাঁ করে বাবা। তর বাবাকে কিছু বললে তো মাথায় নেয়না আছে তো সারাদিন কাজ আর কাজ বই পত্তর নিয়ে। নিলয়ের বয়স সাত ছুই ছুই।নিলয় পিড়িটা দিয়ে বললো আজকে কি পিঠা বানাবে মা। মা বললো চিতই জানিসতো স্বরসতীর পিঠা কত পছন্দ ছিলো চিতই। স্বরসতী নিলয়ের বছর খানেক ছোট ছিলো ও মারা গেলো বছরখানেক হলো মা বিশ্বাস করেনা স্বরসতী আমাদের মধ্যে আর নেয়। নিলয় কথাটা আর বেশি দুর আগাইনা কারণ কথা বললে মার মন খারাপ হবে। স্বরসতী এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকে মায়ের মুখ দিন দিন ফ্যাকাঁসে হয়ে যাচ্ছে শরীরেও যেন দিনদিন রোগ বাসা বাঁধছে দুশ্চিন্তায়। মাকে জড়িয়ে ধরে নিলয় চুলগুলো এলোমেলো করে নেয় পিঠ ছড়িয়ে চুলগুলো জায়গা করে নিলো। মা চিতই পিঠা কিভাবে বানাবে.. মা বলা শুরু করলো প্রথমে চালের গুড়ো গরম পানি দিয়ে হালকা লবণ দিয়ে একটক পিঠার ডো নির্দিষ্ট করে রাখবে
কিছুক্ষণ পর মাটির কড়াই গরম দিয়ে সেখানে ঢেলে পিঠার পরিমাপ মতো ডো ঢেলে দিবো তারপর মা উত্তেজিত হয়ে নিলয় জিগায়.. মা বলে এক দুই মিনিট পর ঢাকনা উঠিয়ে নিয়ে পিঠা হয়ে যাবে।
সাথে হাসেঁর মাংস দিয়ে ছোটবেলায় মা বানাইতো বুঝলি নিলয়। যতই করি মায়ের মতো হয়নারে নিলয়। মায়ের হাতের পিঠা চোখে হারাই। নিলয় বসে পড়লো পিঠা নিয়ে বলতে থাকলো মা কত্ত সাধ হয়ছেগো।
মন্তব্য করুন: