প্রকাশিত:
২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:০২
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের গাড়িবহরে ট্রাক চাপা পড়া সড়ক দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাত ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড়ে জড়ো হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
এসময় শিক্ষার্থীরা “গাড়ির ভিতর হামলা কেন, জবাব চাই জবাব চাই ; আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ; ইসকনের কালো হাত, ভেঙে দাও পুড়িয়ে দাও; জেগেছেরে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে; সারজিসের উপর হামলা কেন, জবাব চাই জবাব চাই; হাসনাতের উপর হামলা কেন, জবাব চাই জবাব চাই” ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
জানা যায়, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জিয়ারত শেষে ফেরার পথে আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি ইউনিয়নের হাজী রাস্তার মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। একই সাথে ঘটনা শুনার পর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক এস এম সুইট বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, আজকের দুর্ঘটনাটা নিতান্তই দুর্ঘটনা বলা যাবে না। এটা ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়নের প্রেসক্রিপশন ছাড়া আর কিছুই না। এরকম হত্যাকাণ্ড নতুন নয়, এটা অনেক আগের কৌশল। যারা দেশপ্রেমের কথা বলে তাদের এভাবে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়। এরকম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরও হত্যার নজির রয়েছে। ছাত্র সমাজ জেগে আছে, সুতরাং আপনারা ঘুমন্ত ভাববেন না। যতদিন পর্যন্ত আমাদের হৃদয়ে ভারত বিরোধী মনোভাব কিংবা আওয়ামী দোসরদের বিরুদ্ধে কথা বলবো ততদিন আমাদের দমিয়ে রাখার জন্য পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। আমাদের বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতি প্রশ্ন রাখতে চাই- কেন তারা ষড়যন্ত্র বুঝতে সক্ষম হয়নি। যে ট্রাক চাপা দিয়েছে সেই ট্রাকের মালিক একজন আওয়ামী দোসর। অতিদ্রুত তদন্ত করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি। শুধু হাসনাত সারজিস নয়, জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী কারো প্রতি এরকম হামলা করার চেষ্টা করে তখন আমরা তার পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশে অবস্থানকারী ভারতের 'র' নিয়ে সচেষ্ট থাকার আহ্বান করছেন তারা।
বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিভিন্ন সংগঠনের সাথে বসে সংহতি সাপ্তাহ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি এক হয়ে যখন সাপ্তাহিক সংহতি পালন করে যাচ্ছে তখনই শহীদ আলিফের জানাজা শেষে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ফেরার পথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত-সারজিসের গাড়ি বহরে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করা হয়। আমরা পতিত সরকারকে দেশত্যাগে বাধ্য করেছি কিন্তু ভারতে বসে বাংলাদেশকে জিম্মি করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে পতিত সরকার এবং বাংলাদেশের কর্তৃত্ব তারা নিতে না পারায় বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্রের পথ বেঁচে নিচ্ছে। এক সারজিস আর এক হাসনাতকে হত্যা করে ছাত্রসমাজ স্থবির করতে পারবেন না। আগামী দিনে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলে একসাথে দেশ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংস্কারে এগিয়ে যেতে চাই। আজকের গাড়ি হামলার দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
মন্তব্য করুন: