মঙ্গলবার, ২৫শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ই ফাল্গুন ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম সন্ধ্যার পর থেকেই টের পাবেন
  • কক্সবাজার বিমানঘাঁটিতে হামলা নিয়ে যা জানাল আইএসপিআর
  • সন্ধ্যা থেকে সারা দেশে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যৌথবাহিনীর প্যাট্রলিং
  • বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়েসহ ৪ মহাসড়ক ও আট সেতুর নাম পরিবর্তন
  • তাপমাত্রা নিয়ে নতুন বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস
  • রমজানে অফিস ৯টা থেকে সাড়ে ৩টা
  • ছিনতাইরোধে মাঠে নামবে পুলিশের ৩ বিশেষায়িত ইউনিট
  • বিপ্লবোত্তর পরিস্থিতিতে শাসন কাজ পরিচালনা সহজ নয়
  • পদত্যাগের আলটিমেটাম নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ২ ডেডলাইন দিয়েছে

ছোট গল্প

লোভ করা ভালো নয়

আফছানা খানম অথৈ

প্রকাশিত:
৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:২৪

রাজা লুইফ ছিলেন লোভী স্বভাবের একজন মানুষ। বিশেষ করে স্বর্ণলংকারের প্রতি তার লোভ ছিলো খুব বেশি। তিনি যেখানে স্বর্ণ পেতেন তা কুড়িয়ে এনে সিন্ধুকে ভরে রাখতেন। তিনি উজির নাজির সেনাপতি মন্ত্রিদের বলে দিয়েছেন, প্রজাদের যে কারো কাছে স্বর্ণ পাবে তা যেন কুড়িয়ে এনে রাজাকে দেয়। এই সেরেছে রাজা হুকুম দিয়েছে, উজির নাজির সেনাপতি, মন্ত্রি মহোদয় কি আর থেমে থাকে?

তারা প্রজাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বর্ণ কুড়াতে শুরু করলো। গরীব প্রজাদের যার কাছে যা পাচ্ছে তা ছিনিয়ে আনছে। রাজার অত্যাচারে প্রজারা অতিষ্ঠ। রাজার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, কে করবে? কেউ সাহস পাচ্ছে না। নিরবে নিভৃতে সবাই সবকিছু হজম করে চলেছে। আর আল্লাহর কাছে বিচার দিচ্ছে।

একদিন এক গরীব প্রজার ছোট্ট মেয়ে চার আনা স্বর্ণের একটা চেইন গলায় দিয়ে খেলতে বেরিয়েছিল। উজির নাজির সেনাপতির চোখে পড়তেই তারা তা কেড়ে নিলো। ছোট্ট মেয়েটিকে রাস্তায় গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদছে। তার কান্না দেখে মা ছুটে আসল। তিনি কেঁদে কেঁদে উজিরদের কাছে চেইনটা চাইলেন। উজির কিছুতেই তা দিতে রাজী হলেন না। তাদের এককথা রাজার নির্দেশ প্রজাদের যার কাছে স্বর্ণলংকার যা পাব তা যেন তার কাছে নিয়ে যাই।

শত কান্নাকাটির পর ও রাজার উজির নাজির সেনাপতি তা কিছুতেই ফেরত দিলো না। গরীব মা নিরুপায় হয়ে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করলেন, হে পরম করুনাময় আল্লাহ,আমি পাপি বান্দার সকল প্রার্থনা কবুল করুন। এই অত্যাচারী রাজার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। জনজীবন বিপন্ন। আমারা আর সহ্য করতে পারছি না। আপনি এর বিচার করুণ। এই অত্যাচারী রাজার পতনদিন। আমিন।

এইভাবে প্রজাগন রাজার পতনের জন্য আল্লাহর কাছে বিচার চাইলেন। আল্লাহ প্রজাদের প্রার্থনা কবুল করলেন।

রাজা প্রতিদিন একবার করে তার স্বর্ণলংকার রাখা ঘর পরিদর্শন করেন। অলংকাগুলো নেড়ে চেড়ে আবার স্ব স্ব স্থানে রেখে দেন।এভাবে সে সিংহাসনে বসার আগে একবার করে সেই ঘর পরিদর্শন করেন এবং অলংকাগুলো দেখে নেন। আজ ও অনুরুপভাবে দেখতে গেলেন। এমন সময় এক দৈত্য তার সামনে হাজির হলো। দৈত্যকে দেখে সে চমকে উঠল। তারপর জিজ্ঞেস করলো,

তুমি কে?
আমি দৈত্য।
কি চাও তুমি?
আমি চাইতে না। দিতে এসেছি। আজ তুমি আমার কাছে যা চাইবে তাই দেব।
সত্যিই বলছ তো।
হুম সত্যিই। বলো তুমি কী চাও?

রাজার স্বর্ণের প্রতি লোভ বেশি। তাই লোভী রাজা অনেক ভেবেচিনতে বলল,
আমি চাই, আগামীকাল সকাল থেকে আমি যাতে হাত দেব তা যেন স্বর্ণ হয়ে যায়।
দৈত্য রাজী হলো এবং বলল,
ঠিক আছে তাই হবে।
রাজার খুশি আর ধরে না।কখন সকাল হবে এই নিয়ে ভাবনা চিন্তা....।

যাক সকাল হলো রাজা সিংহাসনে গিয়ে বসল। তার সামনে চা পরিবেশন করা হলো। সে চায়ের কাপে হাত দিতে তা স্বর্ণ হয়ে গেল। এরপর খাবারে হাত দিলো তা স্বর্ণ হয়ে গেল। এরপর চেয়ারে হাত দিলো তা স্বর্ণ হয়ে গেল। উজির নাজির সেনাপতিকে টাচ্ করলো তারা ও স্বর্ণ হয়ে গেল। নিজের স্ত্রীকে টাচ্ করলো সে ও স্বর্ণ হয়ে গেল। এভাবে সে যেখানে হাত দিচ্ছে সব স্বর্ণ হয়ে যাচ্ছে। পুরো রাজ প্রাসাদ স্বর্ণে পরিণত হলো। রাজা পড়ল মহাচিন্তায় এভাবে চলতে থাকলে সিংহাসন চালাব কিভাবে?

কিছুদিন পর ফের দৈত্য তার সামনে আবার হাজির হলো। রাজা কেঁদে কেঁদে দৈত্যকে বলল,

মহারাজ আমি এমন জীবন চাইনা। সব যদি সোনা হয়ে যায়,তাহলে আমি রাজ্য চালাব কিভাবে? আমি প্রজাদের উপর অনেক অন্যায় করেছি। তাদের কাছ থেকে স্বর্ণলংকার কেড়ে নিয়েছি। জুলুম করেছি। আমি আর স্বর্ণলংকার চাই না। আপনি আপনার স্বর্নলংকার ফিরিয়ে নিয়ে যান। আমার আগের জীবন আমাকে ফিরিয়ে দিন। আমি প্রজাদের নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকতে চাই।

দৈত্য তার প্রস্তাবে রাজী হলো এবং তাকে তার আগের জীবন ফিরিয়ে দিলো। রাজা আগের মতো সবকিছু ফিরে পেল। সে তার ভুল বুঝতে পারলো, এবং প্রজাদের সকল স্বর্নলংকার তাদের কাছে ফিরিয়ে দিলো। সে বুঝতে পারলো "লোভ করা ভালো নয়"।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর