মঙ্গলবার, ২৫শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ই ফাল্গুন ১৪৩১ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম সন্ধ্যার পর থেকেই টের পাবেন
  • কক্সবাজার বিমানঘাঁটিতে হামলা নিয়ে যা জানাল আইএসপিআর
  • সন্ধ্যা থেকে সারা দেশে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যৌথবাহিনীর প্যাট্রলিং
  • বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়েসহ ৪ মহাসড়ক ও আট সেতুর নাম পরিবর্তন
  • তাপমাত্রা নিয়ে নতুন বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস
  • রমজানে অফিস ৯টা থেকে সাড়ে ৩টা
  • ছিনতাইরোধে মাঠে নামবে পুলিশের ৩ বিশেষায়িত ইউনিট
  • বিপ্লবোত্তর পরিস্থিতিতে শাসন কাজ পরিচালনা সহজ নয়
  • পদত্যাগের আলটিমেটাম নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ২ ডেডলাইন দিয়েছে

মংডু আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে, নাফ নদে নিষেধাজ্ঞা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত:
১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২০

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান যুদ্ধে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি মংডু শহর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে। ফলে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ২৭০ কিলোমিটার সীমান্তের পুরোটাই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। দখলের পর নাফ নদের আরাকান জলসীমায় অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তারা।

কয়েক মাস ধরে মিয়ানমারের জান্তার সঙ্গে লড়াইয়ের পর রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করে আরাকান আর্মি। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) মিয়ানমারের গণমাধ্যম ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। এদিকে, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জল ও স্থল পথে টহল জোরদার করেছেন কোস্ট গার্ড ও বিজিবি সদস্যরা।

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশি জেলেসহ সব নৌযানকে সেদিকে না যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী ও আরকান আর্মির সঙ্গে টেকনাফ অঞ্চলে সীমান্তের ওপারে যুদ্ধ চলছে।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যেই আমরা জেনেছি, আরাকান আর্মি টেকনাফ সীমান্তের ওপারের এলাকাটি পুরোপুরি দখলে নিয়েছে। রবিবার থেকে সেদেশের জলসীমানায় নাফনদে সব নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়। তাই আমরাও টেকনাফের ফিশিং ট্রলার মালিকদের অবহিত করেছি, নাফ নদ সীমান্ত এ মুহূর্তে অতি ঝুঁকিপূর্ণ। সেখানে কোনও ট্রলার না যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার রয়েছে।’

মিয়ানমারের গণমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, আরাকান আর্মি দাবি করেছে, রবিবার সকালে জান্তার সীমান্ত এলাকার সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নম্বর ৫ লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। মংডু শহরের বাইরে তারা অবস্থান করছিল। তারা দাবি করে, তারা জান্তা বাহিনীর পাশাপাশি তাদের মিত্র আরাকান রোহিঙ্গা আর্মির রোহিঙ্গা মিলিশিয়া, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে। তারা ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়েছে।

টেকনাফ সীমান্তে বসবাসকারীরা বলছেন, গত কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারের রাখাইনের মংডুতে চলমান যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে। গোলার শব্দে আতঙ্কে রয়েছেন এপারে টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দারা। রাখাইনে অধিকাংশ জায়গা আরকান আর্মির দখলে ছিল। তবে মংডু শহরের কিছু অংশ জান্তা সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সেটির কারণে যুদ্ধ চলছিল দুই পক্ষে। ইতোমধ্যে সেটিও আরকান আর্মি দখলে নিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।

‘নাফ নদে আরাকান আর্মির নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জেনেছি’ উল্লেখ করে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের চট্টগ্রাম মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সোয়াইব বিকাশ বলেন, ‘বাংলাদেশ জলসীমানায় আমরা কাউকে ঢুকতে দেবো না। জালিয়ার দ্বীপ-সেন্টমার্টিন দ্বীপ পর্যন্ত নাফ নদ ও সাগরে আমাদের টহল জোরদার রয়েছে। পাশাপাশি জেলেদের জলসীমা অতিক্রম না করতে বলা হচ্ছে।’

টেকনাফ-২ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ বলেন, ‘রাখাইনে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সীমান্তে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে। যেকোনো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ও নিরাপত্তায় নাফ নদে এবং স্থলে বিজিবির সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন। এ ছাড়া যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্যও বিজিবি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

রাখাইন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মংডুতে লড়াইয়ের পর সোমবার (৯ ডিসেম্বর) আরকান আর্মি মিলিটারি অপারেশন কমান্ড ১৫–এর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকে গ্রেফতার করে। এর বাইরে ৮০ রোহিঙ্গা বিদ্রোহী ও জান্তা সেনাকে গ্রেফতার করেছে আরাকান আর্মি।

গত মে মাসের শেষ দিক থেকে মংডুতে হামলা শুরু করে আরাকান আর্মি। মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ পেতে তাদের ছয় মাস সময় লেগেছে। আরাকান আর্মির দাবি, বাংলাদেশ সীমান্তের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শহর মংডু, রাখাইনের বুথিডং ও শিন এলাকার পালেতাওয়ার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা বিদ্রোহী গোষ্ঠী ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য আরাকার আর্মি। ইতিমধ্যে এ গোষ্ঠী গত বছরের অক্টোবর থেকে হামলা চালিয়ে উত্তরের শান রাজ্যের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এর মধ্যে আরাকান আর্মি গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে হামলা চালিয়ে রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৩টির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর