প্রকাশিত:
১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:২২
স্বাস্থ্যসেবা খাত নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। নিম্ন আয়ের মানুষের শেষ ভরসার স্থল সরকারি হাসপাতাল। কিন্তু, দালাল আর ঔষধ কোম্পানির দৌরাত্ম্যে প্রতারিত হন সাধারণ মানুষ। যে সেবাটি সাধারণ মানুষ সরকারের নির্ধারিত ফি এবং বিনামূল্যে নিতে পারে সেখানে দালাল এবং ঔষধ কোম্পানি প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়।
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায়, আগত সেবাপ্রার্থীকে সাধারণ একটি রক্ত পরীক্ষাও বাহিরে নিয়ে করাচ্ছেন স্থানীয় দালাল চক্র। অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো দালাল নিয়োগের মাধ্যমে রোগীদের ভাগিয়ে নেয়।
এবিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আহমেদ তানভীর হাসান থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা রোগীদের যথাযথ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। তবে আমাদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় কিছু সেবা আমরা দিতে পারছিনা। সে বিষয়ে আমরা আবেদন দিয়ে রেখেছি শীঘ্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আজ হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। সেবাপ্রার্থীরা সেবা নিচ্ছেন নির্বিঘ্নে উপস্থিতি নেই দালাল কিংবা ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি। কিন্তু, গত রবিবার(০৮ডিসেম্বর) পর্যন্ত অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায় ঔষধ কোম্পানি এবং দালালদের ব্যস্ততা।
গত কয়েকদিন আগে লক্ষীপুর জেলা সদর হাসপাতালে হাজীগঞ্জ উপজেলার টোরাগড় গ্রামের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী যুবক তাফাজ্জল হোসেনের চিকিৎসা অবহেলায় মারা যান। তার ভাই, অভিযোগের এক পর্যায়ে বলেন সরকারি হাসপাতালেও বিনিময় ছাড়া কিছু পাওয়া যায়না। জানা যায়, তাফাজ্জল হোসেন যার তত্বাবধানে ছিলেন তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচিত মুখ ডাক্তার জয়নাল আবেদীন। তিনি রাজধানী ঢাকাতেও নিয়মিত চেম্বার করেন। একজন চিকিৎসক সরকারি চাকরিতে থেকে অন্য জেলায় চেম্বার করে কিভাবে সঠিক সেবা দিতে পারেন তা প্রশ্ন থেকে যায়।
গত ১৮ নভেম্বর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব উম্মে হাবিবার সই করা এক নির্দেশনায় বলা হয়, ঔষধ কোম্পানির কোনো ডিলার কিংবা রিপ্রেজেনটেটিভ হাসপাতালে প্রবেশ করতে পারবেন না। যদি সেটি মানা না হয়, তবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু, সেটি আমলে নেয়ার নজির দেখা যায়নি কোনো হাসপাতালে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু অসাধু চিকিৎসক এবং কর্মকর্তা কর্মচারীরা ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর প্রলোভনে প্রলুব্ধ হওয়ায় সঠিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ। গুনতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ।
এবিষয়ে চাঁদপুর জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ নুর আলম দীন থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি সঠিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে। কোনো রিপ্রেজেনটেটিভ হাসপাতালে না শুধু হাসপাতালের আশেপাশেও থাকতে পারবেনা। আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে কথা বলবো তিনি ব্যবস্থা নিবেন। তিনি ব্যর্থ হলে কিংবা কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকলে আমাকে জানাবেন। আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিবো।
সাধারণ মানুষ জানান, চিকিৎসকেদর সদিচ্ছাই পারে সঠিক সেবা নিশ্চিত করতে।
মন্তব্য করুন: