প্রকাশিত:
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:২৩
মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে নাসার পাঠানো পার্কার সোলার প্রোব। সূর্যের রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে ২০১৮ সালে উৎক্ষেপণ করা এই মহাকাশযান। এটা এখন পর্যন্ত সূর্যকে ২১ বার প্রদক্ষিণ করেছে।
গতকাল ২৪ ডিসেম্বর এটি সূর্যের করোনা বলয়ের একেবারে কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। তৈরি হয়েছে ঐতিহাসিক রেকর্ড।
কতটা কাছে পৌঁছেছে পার্কার প্রোব?
নাসার তথ্য অনুযায়ী, পার্কার সোলার প্রোব এই মিশনে সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে মাত্র তিন কোটি ৮৬ লাখ মাইল দূরে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে এটি সূর্যের করোনা অঞ্চলে প্রবেশ করে। অসাধারণ এই মহাকাশযান ঘণ্টায় চার লাখ ৩০ হাজার মাইল গতিতে চলেছে।
এটা মনুষ্যনির্মিত কোনো যন্ত্রের সর্বোচ্চ গতির রেকর্ড এটি।
কেন এই মিশন?
সূর্যের বায়ুমণ্ডল বা করোনা নিয়ে বিজ্ঞানীদের কৌতূহল বহুদিনের। তারা লক্ষ্য করেছেন, সূর্যের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫,৫০০ থেকে ৬,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও এর করোনার তাপমাত্রা প্রায় ১০ লাখ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ সাধারণ ধারণা অনুযায়ী, পৃষ্ঠ থেকে দূরে থাকা অংশগুলোর তাপমাত্রা কম হওয়া উচিত।
এই বৈপরীত্যের কারণ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নন। গবেষকদের ধারণা, সূর্যের চৌম্বকীয় ক্ষেত্র এর মূল কারণ হতে পারে। এই রহস্য সমাধানের জন্যই নাসা সূর্যের দিকে পার্কার সোলার প্রোব পাঠিয়েছে।
পার্কার সোলার প্রোবের বেশ কিছু লক্ষ্য আছে। প্রধান লক্ষ্যগুলো হলো- সূর্যের করোনার তাপমাত্রা এত বেশি কেন, তা নির্ধারণ করা, চৌম্বকীয় ক্ষেত্র এবং সৌর বায়ুর ওপর গবেষণা করা এবং সূর্যের কার্যকলাপ এবং পৃথিবীর ওপর এর প্রভাব সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করা।
পার্কার সোলার প্রোব পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম যন্ত্র, যা সূর্যের এত কাছে পৌঁছাতে পেরেছে। এটি সূর্যের আশপাশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে পৃথিবীতে পাঠাচ্ছে, যা সৌরবিজ্ঞানীদের গবেষণায় সাহায্য করবে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এই মিশন মহাবিশ্বের অনেক অজানা তথ্য উদঘাটনে সহায়ক হবে।
পার্কার সোলার প্রোবের এই অসাধারণ মিশন মানবজাতির প্রযুক্তি এবং গবেষণার নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। সূর্য সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধি পেলে পৃথিবীর ওপর এর প্রভাব এবং ভবিষ্যৎ মহাকাশ মিশন আরো উন্নত হবে। এই সাফল্য মানবজাতির মহাকাশ জয়ের অগ্রযাত্রায় একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
মন্তব্য করুন: