প্রকাশিত:
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:৩৩
বিশ্ব ইজতেমার আয়োজকদের বিবদমান দুই পক্ষই সারা দেশে মসজিদ ব্যবহারে সরকারের দেওয়া সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করেছে। আজ সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) তাবলিগ জামাতের কার্যক্রমে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই সিদ্ধান্তে উভয় পক্ষই একমত পোষণ করেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল ছালাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদের অনুসারীরা আগে থেকে জেলা ও উপজেলায় যেসব মসজিদে নিজ নিজ তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিবদমান পক্ষদ্বয় সংশ্লিষ্ট মসজিদে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
শুরায়ে নেজামের (জুবায়েরপন্থী) মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, ‘সরকারি আদেশের ভেতরে কাকরাইল মসজিদের বিষয়ে আলাদা করে কিছু বলা হয়নি। আগে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, তার সবই বলবৎ আছে। প্রশাসনের কাছে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কোথাও কোথাও সমস্যার খবর এসেছে, সে কারণে নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
আর তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের সাদ অনুসারীদের মিডিয়া সমন্বয়ক মো. সায়েম জানান, আমরা কাকরাইল মসজিদের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী সরকারের কাছে বৈষম্যবিরোধী সিদ্ধান্ত আশা করছি।
সারা দেশে জুবায়েরপন্থীরা বিভিন্ন মারকাজ ও মসজিদ দখল, আমাদের সাথিদের আমলে বাধা প্রদান, ভয়াবহ জুলুম, দেশব্যাপী মব জাস্টিস ও ম্যাসাকার চালাচ্ছে। আমরা আশা করছি, এই প্রজ্ঞাপনের দ্বারা বিষয়টি দ্রুত সমাধান হবে।
আগামী বছর দুই ধাপে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় পর্ব ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া কথা রয়েছে।
৩ ডিসেম্বর শুরায়ে নেজামের আয়োজনে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রস্তুতি হিসেবে ৫ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা শেষ হয়। ২০ ডিসেম্বর সাদপন্থীরা জোড় ইজতেমা করবেন ও জুবায়েরপন্থীরা করতে দেবে না বলে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর সাদপন্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু ১৭ ডিসেম্বর রাতেই ঘটে যায় অপ্রীতিকর ঘটনা। নিহত হন তিনজন ও আহত হন শতাধিক মুসল্লি।
এই ঘটনায় টঙ্গী পশ্চিম থানায় জুবায়েরপন্থীদের পক্ষ থেকে সাদপন্থীদের ২৯ জনকে শনাক্ত ও শত শত অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা হয়। এই মামলার শনাক্ত ৫ নম্বর আসামি মুয়াজ বিন নূর ও ৬ নম্বর আসামি জিয়া বিন কাসেম গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
জুবায়েরপন্থীরা বলছেন, তারা এককভাবে ইজতেমা করবেন, সাদপন্থীদের ইজতেমা করতে দেওয়া হবে না। তবে বিশ্ব ইজতেমার বিষয়ে সরকার এখনো পরিষ্কার কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। এখন ইজতেমা ময়দান সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
মন্তব্য করুন: