প্রকাশিত:
২২ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭:০৫
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটে ভোগান্তিতে পড়ছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। ভাঙ্গা উপজেলায় বসবাসরত প্রায় তিন লক্ষ মানুষের একমাত্র সরকারি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার মানুষ এখানে স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসেন অথচ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ডাক্তার রয়েছে মাত্র ৮ জন।
ডাক্তার সংকটের কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের। তাই স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসা রুগীরা তাদের কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা না পেয়ে দালালের মাধ্যমে দ্বারস্থ হচ্ছে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে। দালালের খপ্পরে পড়ে রোগীদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক নারী অভিযোগ করে বলেন, টিকিট কেটে প্রায় এক ঘন্টা যাবৎ ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করছি কিন্তু ডাক্তার এখনো আসেনি। আরেকজন রোগীর স্বজন অভিযোগ করে বলেন, সকাল থেকে এসে বসে আছি ভাগ্নিকে ডাক্তার দেখানোর জন্য কিন্তু হাসপাতালে রোগীর এত চাপ যে একজন ডাক্তার এত রোগী দেখতে হিমশিম খাচ্ছেন।
হাসপাতালটির ল্যাবেও দেখা গেল লোকবল সংকট।
এ ব্যাপারে ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট জাহিদ হাসান সোহাগ বলেন, হাসপাতালে প্রতিনিয়ত রোগীর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু সেই তুলনায় আমাদের আমাদের লোকবল অনেক কম। এখানে ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে মাত্র ১ জন এবং মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট হিসেবে মাত্র ২ জন কর্মরত রয়েছে।
প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী ল্যাবরেটরীতে আসে। যেটা গরমের দিনে আরো বৃদ্ধি পায়। এত সংখ্যক রোগীর সেবা দিতে আমাদের জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য যে পরিমাণ সরঞ্জামাদি চাহিদা দেওয়া থাকে সেটি আমরা পাই না। যার ফলে মাঝেমধ্যেই আমাদের এখানে কিছু টেস্ট বন্ধ রাখা হয়।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার তানজিব যুবায়ের বলেন, ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের মোট পদ রয়েছে ২২ টি। এই ২২ টি পদের মধ্যে আমাদের এখানে কর্মরত রয়েছে ১২ জন। কিন্তু এদের মধ্যে আবার ৪ জন ডাক্তার ভাঙ্গা হাসপাতাল থেকে বেতন উত্তোলন করলেও একটি লিখিত আদেশে অন্য জায়গায় কর্মরত রয়েছে ফলে আমাদের হাসপাতালে বর্তমানে কর্মরত আছে মাত্র ৮ জন চিকিৎসক। পূর্বে আমাদের হাসপাতালে অনেক অপারেশন চালু ছিল কিন্তু বর্তমানে ডাক্তার সংকটের কারণে শুধুমাত্র সিজারিয়ান অপারেশন ছাড়া অন্য অপারেশনগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। চিকিৎসক সংকট প্রবল হওয়ার বিষয়টি আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি এবং তারা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন খুব খুব দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান তারা করবেন।
হাসপাতালে দালালের দৌরাত্মের ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ব বন্ধে আমরা উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করেছি এবং চিঠি দিয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুতই এখানে আনসার নিয়োগ হবে এবং এই দালালদের দৌরাত্ব বন্ধ হবে।
তিনি আরো বলেন ভাঙ্গা হাসপাতালে প্রচুর পরিমাণে এক্সিডেন্টের রুগী আসে কিন্তু আমাদের এখানে ট্রমা সেন্টার না থাকার কারণে আমরা তাদেরকে পর্যাপ্ত সেবা দিতে পারি না। তাই ট্রমা সেন্টারের ব্যাপারে আমরা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি তিনি আশ্বস্ত করেছেন খুব দ্রুতই ভাঙ্গাতে একটি ট্রমা সেন্টার চালু হবে।
মন্তব্য করুন: