প্রকাশিত:
১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৩:৩৪
আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই পর্দা উঠবে ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির। উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক পাকিস্তান।
এবারের আসরে পাকিস্তান শুধু আয়োজক নয়, বর্তমান চ্যাম্পিয়নও।
২০১৭ সালে শেষবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আসর বসেছিল ইংল্যান্ডে। আসরের ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে ১৮০ রানের বিশাল ব্যবধান হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান। সেই চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য ছিলেন বাবর আজম। তিনে নেমে ৫২ বলে ৪৬ রান করেছিলেন সেসময়ের নবীন এই ব্যাটার। পরবর্তীতে বাবর শুধু পাকিস্তান নয়, হয়ে উঠেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটারে। তার ওপর পাকিস্তানের সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করছে।
এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগ পাকিস্তানের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ। ১৯৯৬ সালের পর এই প্রথম তাদের মাটিতে হচ্ছে আইসিসির কোনো টুর্নামেন্ট। যদিও হাইব্রিড মডেলের টুর্নামেন্ট হওয়ায় কিছু ম্যাচ হবে দুবাইয়ে। তারপরও অধিকাংশ ম্যাচ হবে পাকিস্তানে। ফলে কন্ডিশনের সুবিধাও পাবে তারা। সেখানে সাধারণত ব্যাটিং পিচেই খেলা হয়। ফলে বাবরদের জন্য মঞ্চ একপ্রকার প্রস্তুত।
আট বছর আগে ২২ বছর বয়সী বাবর দলকে যেভাবে শিরোপা জেতাতে সহায়তা করেছিলেন, ৩০ বছর বয়সে তার দায়িত্ব আরও বেড়েছে। এখন তিনি দলের ব্যাটিং স্তম্ভ। তার নিজের লক্ষ্য এবার বড় কিছু। প্রথম ম্যাচের আগে তাই বেশ উৎসাহের সঙ্গেই বললেন, 'খেলোয়াড় হিসেবে আমিও সমর্থকদের মতোই উত্তেজিত। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর অনেক কিছুই বদলে গেছে। দলে অনেক নতুন খেলোয়াড় এসেছে। সর্বশেষ আসরের শিরোপাজয়ী দলের মাত্র তিন বা চার জন এই দলের আছে। কিন্তু আত্মবিশ্বাস আগের মতোই আছে। '
বাবর যেমন বললেন, অনেক কিছুই বদলে গেছে। আসলেই তাই। সর্বশেষ দুই আইসিসি টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের পর দলটির কোচিং প্যানেলে বেশ পরিবর্তন এসেছে। এর মধ্যে ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাদের ভয়াবহ বিপর্যয়, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে যাওয়ার পর অনেক ঝড় বয়ে গেছে পাকিস্তান দলে। তবে বাবর বলেছেন, এসব পরিবর্তন দলের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলবে না।
দলে কোচ সংক্রান্ত নানা ঝামেলা থাকলেও সেটিকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাচ্ছেন না বাবর, 'কোনো চাপ নেই। অতীত পেছনে ফেলে এসেছি আমরা। আমরা নিজেদের ভুল নিয়ে কথা বলেছি এবং এসব নিয়ে কাজ করেছি। কোনো দলের সিনিয়র খেলোয়াড়কে দায়িত্ব নিতে হয় এবং নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হয়। আমি এসব ইতিবাচকভাবে দেখি।'
গ্রুপ পর্বে আজ নিজেদের প্রথম ম্যাচটি খেলবে পাকিস্তান। কিউইদের বিপক্ষে ম্যাচটি করাচিতে হবে। ২৩ ফেব্রুয়ারি নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচটি খেলতে দুবাইয়ে যেতে হবে তাদের। এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে ফের দেশে ফিরবে পাকিস্তান। রাওয়ালপিন্ডিতে হবে ম্যাচটি। বাবর মনে করেন, ঘরের মাটিতে খেলার কিছু সুবিধা থাকলেও দিন শেষে ভালো খেলেই জিততে হয়।
পাকিস্তান দলের আরেক ব্যাটিং স্তম্ভ মোহাম্মদ রিজওয়ান। এখন তিনি দলের অধিনায়কও। ফলে সবচেয়ে বেশি চাপ সামলাতে হবে তাকেই। কিন্তু কাল সংবাদ সম্মেলনে বেশ হাসিখুশি অবস্থায় দেখা গেল তাকে। তার দলের সামর্থ্য নিয়ে খুবই আত্মবিশ্বাসী রিজওয়ান বলেন, 'আমাদের ভালো খেলোয়াড় নেই বা সামর্থ্য নেই, একথা বলার সুযোগ নেই। কিন্তু হ্যাঁ, কোনো একদিন হয়তো আমরা ভালো খেলতে পারি না, সেদিন হয়তো অন্য দল জিতে যায়। কিন্তু আমরা ফলাফল পাকিস্তানের পক্ষে আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। '
রিজওয়ান আরও বলেন, 'আমাদের দলে ১৫ জন খেলোয়াড়ই অধিনায়ক। আমি টস করতে যাই, কিন্তু দলে সবার গুরুত্ব সমান। তবে দলের সিনিয়রদের বেশি দায়িত্ব নিতে হবে এবং পাকিস্তানের জন্য একইভাবে পারফর্ম করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা যদি একসঙ্গে বীরের মতো এবং স্মার্টলি লড়াই করি, আল্লাহ আমাদের ফল দেবেন। সবকিছু তার হাতেই। '
মন্তব্য করুন: