প্রকাশিত:
২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৬:২৫
ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত এক শিক্ষার্থীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সহ-সমন্বয়ক সায়েম আহমেদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত সায়েম আল ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযোগকারী বাঁধন বিশ্বাস স্পর্শ সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলামের কাছে অভিযোগ দেন বাঁধন। অভিযোগে তিনি বলেন, ‘গত ২২ তারিখ (বুধবার) আমার একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সায়েম আহমেদ হুমকি দিয়েছেন। তাই আমার জীবন এখন ঝুঁকিতে আছে। উক্ত ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে উক্ত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’
জানা যায়, কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ইবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে কয়েকজন সহ-সমন্বয়ক হামলার বিষয়ে ছাত্রদলের নাম বলেননি। এই নিয়ে সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেন বাঁধন।
নিজ ফেসবুক টাইমলাইনে তিনি লিখেন, “তা বড় ভাইয়েরা, আপনাদের চোর বলার কারণ একটু বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে বলি! গত পরশুদিন কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের নৃশংস আক্রমণের প্রতিবাদে আমাদের ইবি ক্যাম্পাসে তৎক্ষণাৎ বিক্ষোভ মিছিল হয়। উক্ত মিছিলের ব্রিফিংয়ে শুধু সুইট ভাই (ইবি সমন্বয়ক) ছাত্রদলের নাম উচ্চারণ করেছিলেন, আপনারা কেউ কিন্তু করেননি। কারণ আপনারা সকল স্থানে সুবিধা নিয়ে চলতে চান। সত্যকে সত্য বলার মানসিকতা থাকতে হবে বড় ভাইয়েরা (ও সরি চোর বড় ভাইয়েরা)।”
এই পোস্টের জেরে ২২ ফেব্রুয়ারি বাঁধনকে শেখ রাসেল হলের সামনে ডেকে নেন সহ-সমন্বয়ক সায়েম। এসময় তিনি বাঁধনকে হুমকি-ধামকি দেন বলে অভিযোগ বাঁধনের।
ফোন রেকর্ড বরাত আলোচনার এক পর্যায়ে ভুক্তভোগীকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, “তুমি রাজনৈতিক কারণে বলতে পারবা না কিন্তু পাবলিকলি পোস্ট করছো। তুমি মোস্ট জুনিয়র একটা ছেলে কিভাবে কথা বলো। তুমি হলে কিভাবে আছো তা কিন্তু আমি জানি। তোমার আগের রেকর্ড কি আমি জানি না? তুমি রাজনীতি বেশি বুঝো?”
ভুক্তভোগী বাঁধন বিশ্বাস বলেন, “আমি ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় সায়েম ভাই আমাকে ডেকে হুমকি দিয়েছেন। আধাঘণ্টা ধরে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলেছে। এই নিয়ে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এর বিচার চেয়ে একটা অভিযোগ পত্র দিয়েছি।”
এ বিষয়ে সহ-সমন্বয়ক সায়েম আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে ওর সাথে আমরা কথা বলেছি। ও যেহেতু নিরাপত্তা শঙ্কার অভিযোগ দিয়েছে। ছাত্র উপদেষ্টা সহ প্রশাসন আমাদের ডাকলে সবার সাথে বসে সমাধান করবো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি মনে করে আমি অন্যায় করেছি তাহলে যেকোনো শাস্তি নিতে প্রস্তুত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, এই বিষয়ে আমার পুরপুরি ধারণা নেই। তবে অভিযোগ যেহেতু দিয়েছে তাই প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত নিলে আমরা সহযোগিতা করবো। সে যদি সত্যি দোষী হয় তাহলে আমরা সাংগঠনিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করা উচিত না। দোষ যদি আমিও করে থাকি তাহলে শাস্তি পেতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, অভিযোগপত্র পেয়েছি। সাথে ফেসবুকের স্কিনশটের ফটোকপিও দিয়েছে। প্রক্টরিয়াল বডিকে নিয়ে বসে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ডকুমেন্টস দেখে হয়তো বা তদন্ত কমিটি গঠন হতে পারে। সে যেই হোক অপরাধ করলে শাস্তি পাবে।
মন্তব্য করুন: