সোমবার, ২১শে এপ্রিল ২০২৫, ৭ই বৈশাখ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আরও কার্যকর উদ্যোগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
  • প্রধান উপদেষ্টার আরো এক বিশেষ সহকারী নিয়োগ, মর্যাদা প্রতিমন্ত্রী
  • ঈদে যথাযথ দায়িত্ব পালন করায় কর্মকর্তাদের প্রধান উপদেষ্টার ধন্যবাদ
  • শেখ হাসিনাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ মিলেছে
  • পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ইউনান প্রদেশের গভর্নরের বৈঠক
  • স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পেশ সন্ধ্যায়
  • শিশু ফাইয়াজের মামলা প্রসঙ্গে যা বললেন আসিফ নজরুল
  • দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ শীর্ষে ঢাকা
  • প্রধান উপদেষ্টার কাছে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা
  • ভিন্নমতের জায়গাগুলো নিয়ে আলোচনা হবে

জাতিসংঘ

গণতান্ত্রিক অবক্ষয়ের মধ্যে নারী অধিকার আক্রান্ত

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত:
৮ মার্চ ২০২৫, ১৫:৫৭

জাতিসংঘ জানিয়েছে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়ে পড়ায় নারীর অধিকারও খর্ব হচ্ছে। জাতিসংঘের প্রধান বলেছেন, সমান অধিকারকে মূলধারায় আনার পরিবর্তে, বিশ্ব নারী বিদ্বেষকে মূলধারায় নিয়ে আসছে।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত জাতিসংঘের নারীবিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্বল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, ক্রমবর্ধমান সংঘাত, মানবিক সংকট এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিভিন্ন সমস্যার কারণে গত বছর বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ দেশে নারীর অধিকার হ্রাস পেয়েছে।

৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে এবং ১৯৯৫ সালে বেইজিং প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশনে নারীর অধিকার বিষয়ক একটি বিশ্বব্যাপী সম্মেলনের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। সম্মেলনটিতে ১৮৯টি দেশ লিঙ্গ সমতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলোর রূপরেখা দিয়ে একটি চুক্তি অনুমোদন করেছিল।

ইউএন উইমেন এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতা বাড়ার সঙ্গে লিঙ্গ সমতার ওপর আঘাতও বেড়ে চলেছে। মূল বিষয়গুলো নিয়ে দীর্ঘদিনের ঐকমত্যকে সক্রিয়ভাবে ক্ষুণ্ণ করছে (নারীর) অধিকারবিরোধীরা। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যেসব দেশে আইন প্রত্যাহার করা সম্ভব হয়নি সেখানে অধিকার বিরোধীরা নীতি বাস্তবায়নকে বাধাগ্রস্ত করছে বা ধীর করে দিচ্ছে। 

জাতিসংঘের সচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিশ্বব্যাপী নারীর মানবাধিকার আক্রমণের শিকার হচ্ছে। সমান অধিকারকে মূলধারায় আনার পরিবর্তে, আমরা নারী বিদ্বেষকে মূলধারায় আনতে দেখছি। গত ৩০ বছরের দিকে ফিরে তাকালে বিশ্বজুড়ে নারী অধিকারের বিষয়ে অগ্রগতি দেখা গেলেও তা যথেষ্ট নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

বিশ্বব্যাপী পার্লামেন্টগুলোতে নারী প্রতিনিধিত্বের হার আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। তবে পুরুষ আইনপ্রণেতাদের সংখ্যা এখনও তিন-চতুর্থাংশ। ২০১০ থেকে স্বাস্থ্যসেবা এবং সহিংসতা থেকে সুরক্ষার মতো সামাজিক সুরক্ষাপ্রাপ্ত নারীর সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে এখনও ২০০ কোটি নারী ও মেয়ে শিশু এর আওতার বাইরে রয়েছেন। আইনি অধিকারের বিবেচনায় ৮৮ শতাংশ দেশ নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে আইন পাস করেছে এবং পরিষেবা তৈরি করেছে। বেশিরভাগ দেশ নারীর প্রতি বৈষম্য নিষিদ্ধ করেছে এবং আরও বেশ কয়েকটি তাদের শিক্ষা ও জীবনের মান উন্নত করছে।

তবে নারীরা এখনও পুরুষদের তুলনায় মাত্র ৬৪ শতাংশ ক্ষেত্রে আইনি অধিকার পেয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২২ সাল থেকে সংঘাত-সংশ্লিষ্ট যৌন সহিংসতার ঘটনা ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই ঘটনার ৯৫ শতাংশ ভুক্তভোগীই নারী ও মেয়ে শিশু। পারিবারিক সহিংসতাকে এখনও একটি উদ্বেগজনক সমস্যা হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।

বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী, নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উদ্বেগজনক হারে অব্যাহত রয়েছে। প্রায় তিনজনের মধ্যে একজন নারী তার ঘনিষ্ঠ সঙ্গী অথবা একজন অ-সঙ্গী কর্তৃক শারীরিক বা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য একইরকম রয়েছে এবং নারীরা পুরুষদের তুলনায় আড়াইগুণ বেশি ক্ষেত্রে বেতনহীন সেবার কাজ করেন।

প্রতিবেদনে নারীর অধিকার উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। ছয় দফা কর্মপরিকল্পনায় নারী ও মেয়েদের জন্য ডিজিটাল বিপ্লব, দারিদ্র্য থেকে মুক্তি, শূন্য সহিংসতা নীতি এবং সম্পূর্ণ ও সমান সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাসহ বিভিন্ন কাজ তুলে ধরা হয়েছে।

এছাড়াও এতে নারীদের জন্য জলবায়ু ন্যায়বিচারের আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনের সঙ্গে থাকা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জলবায়ু অভিযোজনে নারী ও মেয়েদের অধিকারকে আমাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে, তাদের নেতৃত্ব ও জ্ঞানকে কেন্দ্রীভূত করতে হবে এবং তারা নতুন সবুজ কর্মসংস্থানের সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

ইউএন উইমেন এর নির্বাহী পরিচালক সিমা বাহুস বলেছেন, সংস্থাটি আশা করে যে প্রতিবেদনের তথ্যের উপর ভিত্তি করে একটি নতুন রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করা গেলে ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ নির্ধারিত লিঙ্গ সমতা অর্জনের লক্ষ্যের আরও কাছাকাছি আসবে বিশ্ব।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর