প্রকাশিত:
২৯ আগষ্ট ২০২৩, ১৭:৩৭
সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যে পরিমাণ অর্থ জমা হবে, তার একটি অংশ চাঁদাদাতারা ঋণ হিসেবেও নিতে পারবেন। অর্থাৎ প্রয়োজনের সময় ব্যাংকের স্কিমের থেকে যেভাবে ঋণ নেওয়া যায়, তেমনই এ স্কিম থেকেও ঋণ নেওয়ার সুযোগ আছে।
জানা গেছে, নিজের বা পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা, গৃহ নির্মাণ, গৃহ মেরামত বা সন্তানের বিবাহের ব্যয় নির্বাহের জন্য চাঁদাদাতা ইচ্ছা করলে পেনশন তহবিলে জমাকৃত অর্থের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ হিসেবে উত্তোলন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রেও ঋণের মাশুল দিতে হবে, যা ধার্য করবে কর্তৃপক্ষ। এ ঋণ সর্বোচ্চ ২৪ কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে এবং পুরো অর্থ চাঁদাদাতার হিসাবে জমা হবে।
মঙ্গলবার(২৯ আগষ্ট) জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কবিরুল ইজদানী খান ব্যবসায়ীদের সংগঠন মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে (এমসিসিআই) অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
পেনশন স্কিমে একাধিকবার ঋণ নেওয়ার সুযোগ থাকছে। তবে প্রথমবার গৃহীত ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত দ্বিতীয়বার ঋণ নেওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে ঠিক কতবার ঋণ নেওয়া যাবে, বিধিমালায় তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।
এ ছাড়া চাঁদাদাতারা চাইলে স্কিম পরিবর্তন করতে পারবেন, বিধিমালায় সেই সুযোগ রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে, চাঁদাদাতা যৌক্তিক কারণ উল্লেখ করে স্কিম পরিবর্তনের আবেদন করতে পারবেন। তিনি বর্তমানে যে স্কিমে আছেন, তার পরিবর্তে অন্য স্কিম বা স্কিমের চাঁদা প্রদানের হার পরিবর্তন করতে পারবেন, অর্থাৎ মাসে এক হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে শুরু করলেও পরবর্তীকালে কেউ চাইলে দুই হাজার বা পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দিতে পারবেন।
বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে, স্কিম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রূপান্তরিত স্কিমে নতুন চাঁদার হিসাব পৃথক রেখে লভ্যাংশ ও পুঞ্জীভূত জমার অর্থের হিসাব করতে হবে, যা আগের স্কিমের পুঞ্জীভূত জমার সঙ্গে যুক্ত হবে।
এ ছাড়া স্বাভাবিকভাবে স্কিম রূপান্তরের কারণে মেয়াদ পূর্তিতে মাসিক পেনশনের পরিমাণ পুনর্নির্ধারিত হবে।বিধিমালায় বলা হয়েছে, চাঁদাদাতার অনুকূলে কর্তৃপক্ষ যে স্কিম ইস্যু করবে, তার সম্পূর্ণ স্বত্ব চাঁদাদাতার।
তিনি সেই স্কিমের স্বত্ব অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা সত্তার কাছে হস্তান্তর করতে পারবেন না। তবে আরও বলা হয়েছে, স্কিম বা পেনশন চলাকালে যেকোনো সময় চাঁদাদাতার মৃত্যু হলে স্কিমের অর্থ চাঁদাদাতা কর্তৃক মনোনীত নমিনি বা নমিনির অবর্তমানে চাঁদাদাতার উপযুক্ত উত্তরাধিকারী বরাবর হস্তান্তরে বাধা নেই।
বিশ্লেষকেরা বলেন, ব্যাংক আমানতের সঙ্গে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের কিছু মিল থাকলেও তাদের মধ্যকার মূল পার্থক্য হলো, ব্যাংক আমানত মানুষের সম্পদ; পেনশন স্কিম একধরনের নিরাপত্তা। অর্থাৎ মানুষের যখন স্বাভাবিক আয় থাকবে না বা আয় করার মতো বয়স থাকবে না, তখন তাঁকে নিরাপত্তা দেবে পেনশন।
মন্তব্য করুন: