প্রকাশিত:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:০৯
জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদের পঞ্চম বর্ষ। এবার ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ ২০২৩-এর সেরা বাংলাবিদ হলেন সিলেটের হোমল্যান্ড আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সামিরা মুকিত চৌধুরী। শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্র্যান্ড ইস্পাহানি মির্জাপুরের উদ্যোগ, পরিকল্পনা ও পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা ভাষা নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় মেধাভিত্তিক টিভি রিয়্যালিটি শো 'ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ'-এর পঞ্চম বর্ষের মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
নতুন প্রজন্মের কাছে শুদ্ধ বাংলা, বানান ও ব্যবহার ছড়িয়ে দিতে ইস্পাহানি মির্জাপুর আয়োজন করে এ বাংলা প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতায় শুদ্ধ বাংলা ভাষার ব্যবহার, বানানচর্চা, শুদ্ধ উচ্চারণ ও ব্যাকরণের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন পর্যায় শেষে চূড়ান্ত প্রতিযোগীদের নির্ধারণ করা হয়।
মহোৎসব ও চূড়ান্ত পর্বে সিলেটের হোমল্যান্ড আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সামিরা মুকিত চৌধুরী সেরা বাংলাবিদ হবার গৌরব অর্জন করে এবং জিতে নেয় ১০ লাখ টাকার মেধাবৃত্তি। দ্বিতীয় স্থান অধিকারী ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অণুশ্রী বণিক পেয়েছে ৩ লাখ টাকা। ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী মানামী জামান তৃতীয় হয়ে পেয়েছে ২ লাখ টাকার মেধাবৃত্তি।
এ ছাড়াও প্রথম ১০ জন প্রতিযোগী প্রত্যেকে পেয়েছে একটি ল্যাপটপসহ ব্যক্তিগত লাইব্রেরি করার জন্যে ৫০ হাজার টাকা সমমূল্যের বাংলা বই ও বইয়ের আলমারি। ১০জনের অন্য সাত জন হলেন- ঢাকার মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এস এম রাইয়ান তাওসীফ, জামালপুর জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী সাদাত আশরাফী নাইব, রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থী দীপায়ন সরকার, এছাড়া সামিহা সালসাবিল খান ইকরা, আশিফা আনজুম, নুযহাত ইসলাম জুহি এবং মো. নাযিল রাহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে ইস্পাহানি টি লিমিটেডের মহা ব্যবস্থাপক ওমর হান্নান জানান, ২০১৭ সাল থেকে যাত্রা শুরু হওয়া বাংলাবিদ অনুষ্ঠানটি পঞ্চম বর্ষ শেষ করলো। করোনার সময় বন্ধ থাকলেও, মহামারি পরবর্তী এই প্রথম আয়োজনে অভূতপূর্ব সাড়া মেলে।
তিনি জানান, এবার প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থী এ প্রতিযোগিতার জন্যে নিবন্ধন করেছে। এছাড়াও, ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই আয়োজনকে নিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মহোৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, আমাদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। এই বাংলাবিদদের হাত ধরে বাংলা এগিয়ে যাবে আরও অনেক দূর। বাংলার বিস্তারে এমন আয়োজন করায় ইস্পাহানিকে অত্যন্ত ধন্যবাদ জানাই।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-ইস্পাহানি গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান ইস্পাহানি, পরিচালক জাহিদা ইস্পাহানি ও ইমাদ ইস্পাহানি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- ইস্পাহানি টি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক জনাব ওমর হান্নান, চ্যানেল আই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর এবং চ্যানেল আই ও ইস্পাহানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে শোভাবর্ধন করতে অনেকদিন পরে আবারও মঞ্চে একসঙ্গে গান পরিবেশন করেন সামিনা চৌধুরী এবং ফাহমিদা নবী। এছাড়াও বাংলাভাষার প্রাচীন কাল থেকে আধুনিককালের পথপরিক্রমার ওপর 'বাংলা ও বাংলাদেশ' শীর্ষক নৃত্য আলেখ্য পরিবেশনা করেন প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী প্রিয়াঙ্কা আনাম। অনুষ্ঠানে আফজাল হোসেনের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কবিতা আবৃত্তি করে এবারের সেরা ১০ বাংলাবিদ। সবশেষে প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী শাম্মী আখতারের বর্ণমালা নিয়ে গাওয়া গান ঝিলিকের কণ্ঠে পরিবেশিত হয়। আর তার সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনা করেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবিন।
এ প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং ভাষাবিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত বিচারকমণ্ডলী পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ-এর বিচারক হিসেবে ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর, দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ও কথা সাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, অধ্যাপক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ত্রপা মজুমদার। এছাড়াও অতিথি বিচারক হিসেবে আফজাল হোসেন মহোৎসবে উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন: