রবিবার, ২৫শে মে ২০২৫, ১০ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা
  • বৈঠকের পর উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতি
  • প্রতিবন্ধকতা কাটিয়েই অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে
  • ১১ হাজার ৮৫১ কোটি টাকার ৯ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
  • সারা দেশে টানা বৃষ্টির পূর্বাভাস
  • প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে থাকছেন
  • সারাদেশে বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার আরও ১৭৪৪
  • জুলাই ঘোষণাপত্র-বিচার-সংস্কার-নির্বাচনের রোডম্যাপ একসঙ্গে চায় এনসিপি
  • একনেক সভা শেষে উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা
  • সন্ধ্যায় বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

এরদোয়ানের বিরাট সাফল্য, কুর্দিদের নতি স্বীকার

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত:
১২ মে ২০২৫, ১৫:৪৭

স্বতন্ত্র কুর্দিস্তানের দাবিতে চলা চার দশকের সশস্ত্র বিদ্রোহে অবশেষে হার মেনে নিলো কুর্দিরা। অস্ত্র ফেলে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)।   

সোমবার (১২ মে) এক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেয় সংগঠনটি। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের জন্য বিরাট এক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে কুর্দিদের এ সিদ্ধান্তকে। 

বিবৃতিতে পিকেকে উল্লেখ করেছে, আমরা সব ধরনের সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করছি। তুর্কি-কুর্দি সম্পর্ককে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার সময় এসেছে।

সংগঠনটি আরও জানায়, এখন থেকে কুর্দি রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও একটি গণতান্ত্রিক কুর্দি জাতি গঠনের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। পিকেকে তাদের ‘ঐতিহাসিক মিশন’ শেষ করেছে।

পিকেকের এই সিদ্ধান্তে তুরস্ক ও ইরাকের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে প্রায় ৪০ বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটল। ৪০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এই সশস্ত্র সংঘাতে।

পিকেকে প্রধান আবদুল্লাহ ওজালান। ১৯৯৯ সাল থেকে তুরস্কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন তিনি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এক বিবৃতিতে সব সশস্ত্র গ্রুপকে ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। পিকেকেকে সিদ্ধান্তটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য একটি কংগ্রেস করারও আহ্বান জানান তিনি, যা তারা গত সপ্তাহে ইরাকের কান্দিল পর্বতমালায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার সময় করেছিল।

কুর্দিদের এই সশস্ত্র বিদ্রোহ অবসানের সিদ্ধান্তকে বিরাট এক সাফল্য বলে বিবেচনা করা হচ্ছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের জন্য। তার একেপি পার্টির মুখপাত্র ওমর সেলিক বলেছেন, যদি সিদ্ধান্তটি সত্যিই বাস্তবায়িত হয় এবং এর সকল মাত্রায় বাস্তবায়িত হয়, তবে এটি একটি নতুন যুগের দ্বার উন্মোচন করবে।

তিনি আরও বলেন, ওজালানের আহ্বানের পর পিকেকের আত্মসমর্পণ এবং অস্ত্র সমর্পণের সিদ্ধান্ত সন্ত্রাসমুক্ত তুরস্কের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। 

দুদিন আগেই এক ভাষণে এরদোগান ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, যেকোনো মুহূর্তে বিলুপ্তির ঘোষণা দেওয়া হতে পারে। সেদিন তিনি বলেছিলেন, আমরা সন্ত্রাসমুক্ত তুরস্কের লক্ষ্যের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।

উল্লেখ্য, কুর্দিদের জন্য একটি স্বতন্ত্র মাতৃভূমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৮৪ সাল থেকে তুরস্কে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছিল পিকেকে। তুরস্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে এই গোষ্ঠীকে।

পিকেকের বিদ্রোহ শুরুর পর থেকে সহিংসতায় প্রায় ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে আড়াই বছরের একটি অস্ত্রবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে সহিংসতার মাত্রা ব্যাপক হারে বেড়ে যায়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কুর্দি-সমর্থিত রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে ব্যাপক কঠোর অবস্থানে যায় তুরস্ক সরকার। অনেক নেতাকেই গ্রেপ্তার করে কারাদণ্ড দেয়।

বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার কুর্দি-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতেও হামলা চালাতে থাকে তুরস্ক-সমর্থিত বাহিনীগুলো। গত মাসে কুর্দি-নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেসকে নির্মূল করার জন্য সিরিয়ার নতুন প্রশাসনকে আহ্বান জানায় তুরস্ক।

তবে, ওজালানের আহ্বানের পর এসব সংঘাত থামার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তুরস্কের কুর্দি নেতারা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগ পর্যন্ত তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি অঞ্চলজুড়ে বসবাস করেছে কুর্দি গোষ্ঠী। বিশ্বযুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্য বিভিন্ন জাতিরাষ্ট্রে ভাগ হলেও স্বতন্ত্র রাষ্ট্র পায়নি কুর্দিরা। ইরাক, ইরান, সিরিয়া, তুরস্ক—এই চারটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে তারা।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর