প্রকাশিত:
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:০৭
কৈশোরবান্ধব স্কুল ও নারীবান্ধব হাসপাতাল গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, সমাজের প্রচলিত ট্যাবু ও কুসংস্কার প্রথা ভেঙে নারী ও কিশোরীদের এগিয়ে যেতে হবে।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সিলেবাসে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সচেতনতা বাড়াতে সরকার, রাজনীতিবিদ, সিভিল সোসাইটি, শিক্ষক সমাজ এবং পরিবারকে যুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সারা দেশের সব হাসপাতাল নারীবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী জাতীয় এসআরএইচআর কনফারেন্স ও যুব/কৈশোর মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান বক্তারা।
‘যুব ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য নিশ্চিত হোক যৌন প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত মেলার উদ্বোধন করেন শহীদজায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন সিবিএইসসি ট্রাস্ট ও বিএমআরসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। বিএনপিএস’র উপ-পরিচালক শাহনাজ সুমীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফাস্ট সেক্রেটারি এনজিকো লরেনজো, নেদারল্যান্ডস অ্যাম্বাসির পলিসি অ্যাডভাইজার মুশফিকা জামান সাতিয়ার, কেএমকেএস’র নির্বাহী পরিচালক শেফালী কা ত্রিপুরা, সিমাভি বাংলাদেশের এমএন্ডই অফিসার তুহীন সরকার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে আওয়ার লাইফ আওয়ার হেলথ প্রকল্পের মাধ্যমে ১২ হাজার ছেলে-মেয়ের কাছে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছাতে পেরেছি। তাদের মধ্যে ৩০০ ক্লাব গড়ে কানেকটিভিটি বাড়ানো হয়েছে। আগামীতে সরকার ও সহযোগী রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা পেলে সারা দেশে নারীদের মাঝে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা বৃহৎ আকারে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে ডা. সৈয়দ মোছাচ্ছের আলী বলেন, সমাজের মূলধারা থেকে যারা বাইরে রয়েছে, বিশেষ করে নারী সমাজকে হাতে হাত রেখে এগিয়ে নিতে হবে। নারী সমাজে পেছনে রেখে রাষ্ট্রের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে হবে।
রোকেয়া কবীর বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরা একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করেছি। কিন্তু সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এতে বড় পরিসরে মানুষের মাঝে সচেনতা গড়ে উঠবে। সারা দেশে স্থানীয় পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালেও নারীবান্ধব কর্নার ও সচেতনতা বৃদ্ধি করার ওপর গুরুত্ব দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।
শেফালী ত্রিপুরা বলেন, এখন নারীরা জরায়ু ও বেস্ট কান্সারে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। চিকিৎসা করাতে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে। রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে নারী পুরুষ সমানভাবে এগিয়ে যেতে হবে। নারীদের পেছনে ফেলে কোনোভাবে রাস্ট্র এগিয়ে যেতে পারবে না।
মুশফিকা জামান সতিয়ার বলেন, বর্তমানে দেশে নারীদের সংখ্যা ৫১ শতাংশ। সিভিল সোসাইটি, সরকার ও সুশীল সমাজ ও সহযোগী ডোনার রাষ্ট্রগুলো সকলে একত্রে কাজ করলে নারীরা রাষ্ট্রের উন্নয়নশীল কাজে আরও ভূমিকা রাখতে পারবে। দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।
শ্যামলী নাসরিন বলেন, নারীরা ৩০-৪০ বছর আগে যেসব কথা বলতে পারত না এখন তারা তাদের স্বাস্থ্যসেবার কথা মুখফুটে বলতে পারছে। নারীরা সমাজকে আলোকিত করে সামনে দিকে এগিয়ে যাবে, এটাই প্রত্যাশা করি।
মন্তব্য করুন: