প্রকাশিত:
২২ মে ২০২৫, ১৮:২০
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় সম্পদের ঘোষণায় অসত্য তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
শেখ হাসিনা তার হলফনামায় ২১ দশমিক ৯১ একর জমির তথ্য গোপন করায় ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২’ এর আওতায় হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়ায় নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুদক কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করা হলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি (০২-০৯-২০০৭ তারিখ) সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। বর্তমান কমিশন ওই সম্পদ বিবরণী পুনঃযাচাই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ওই সম্পদ বিবরণী পুনঃযাচাইকালে বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য যাচাইয়ের পাশাপাশি ওই সময়ে শেখ হাসিনা কর্তৃক দাখিল করা আয়কর নথি ও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত হলফনামার তথ্য অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা পর্যালোচনা করেন। যেখানে দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে শেখ হাসিনার নিজ নামে উত্তরাধিকার ও ক্রয়সূত্রে অর্জিত স্থাবর সম্পদ/জমির মোট পরিমাণ নয় দশমিক ৩০৮ একর এবং ক্রয়কৃত স্থাবর সম্পদ/জমির মূল্য এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং তার মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ তিন কোটি ২৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩৪৪ টাকা মর্মে বর্ণনা করেন। এর বিপরীতে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দুর্নীতি দমন কমিশন তার নামে সর্বমোট ২৮ দশমিক ৪১১ একর স্থাবর সম্পদের তথ্য পায়, যার মধ্যে ক্রয়কৃত স্থাবর সম্পদ/জমির মূল্য ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার ১০ টাকা এবং তার নামে প্রাপ্ত সর্বমোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ পাঁচ কোটি ১৮ লাখ ১০ হাজার ১৫৪ টাকা।
অপরদিকে শেখ হাসিনা কর্তৃক নির্বাচন কমিশনে ২০০৮ সালের ১৯ নভেম্বর দাখিলকৃত হলফনামা পর্যালোচনায় তার নিজ নামে অর্জিত জমির পরিমাণ ৬ দশমিক ৫০ একর উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে ক্রয়কৃত জমির অর্জনকালীন অর্থমূলা ১,৭৫,০০০/- টাকা এবং তার মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৩,৪৬,৯৯,৯০৪/- টাকা ঘোষণা করেন।
ফলে তিনি নবম জাতীয় সংসদের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী হলফনামায় (২৮, ৪১১ একর ৬.৫০ একর) তথা ২১.৯১১ একর জমি ও জমির ক্রয় মূল্যে (৩৩,৬৬,০১০-১,৭৫,০০০)-৩১,৯১,০১০/-টাকার অসত্য তথ্য দিয়েছেন এবং নিজ কর্তৃক ১,৯৩,২০,০০০/-টাকা মূল্যের ব্যবহৃত গাড়ির তথ্য গোপন করে হলফনামায় অসত্য তথ্য দিয়েছেন।
সূত্রস্থ নথির প্রতিবেদনের আলোকে কমিশনের সিদ্ধান্ত তুলে ধরে চেয়ারম্যান বলেন, যেহেতু হলফনামায় মিথ্যা ঘোষণা দেওয়ার বিষয়টির বিষয়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সেহেতু ওপরে বর্ণিত উদ্ঘাটিত তথ্যের ওপর প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদক থেকে নির্বাচন কমিশন প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে যেহেতু অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত অবৈধ সম্পদ বিষয়ে প্রাপ্ততথ্য ২০০৮ সালের বিধায়, বর্তমান অবস্থা পর্যন্ত বিস্তারিত অনুসন্ধান করে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে প্রাপ্ত পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনের আলোকে দুদক পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মন্তব্য করুন: