বুধবার, ৪ঠা জুন ২০২৫, ২০শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • সব ধরনের চাকরির নিয়োগে বাধ্যতামূলক হচ্ছে এনআইডি
  • সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় উচ্চপর্যায়ের কমিটি হচ্ছে
  • বাস্তবমুখী মিত্যব্যয়ীতার বাজেট দেওয়া হয়েছে
  • ঈদে পরিবহনে ডাকাতি এড়াতে সবার ছবি তোলা হবে
  • ট্রাইব্যুনালে হাজির হননি শেখ হাসিনা, ১৯ জুন চূড়ান্ত শুনানি
  • জুলাই সনদে কী থাকবে তা এখনই নির্ধারণ করতে হবে
  • নগর ভবনে ইশরাক সমর্থকদের অবস্থান
  • সন্ধ্যার মধ্যে যেসব অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়ার আভাস
  • ডিসেম্বরে চালু রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র, নেপাল থেকেও আসছে ৪০ মেগাওয়াট
  • বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য থাকছে যেসব সুবিধা

আমাদের আইকন, তুমি জিয়াউর রহমান

ইসহাক আসিফ

প্রকাশিত:
২৯ মে ২০২৫, ১২:৫৮

মেজর জিয়াউর রহমান। আমার আবেগ ও অনুভূতি। আমি যদি তাকে খুঁজতে যাই তাহলে আগে কৃষকের কথা বলবো। কথা বলবো খাল খনন কর্মসূচি প্রসঙ্গে। তিনি শহীদ হয়েছেন। আমি তাকে জীবিত দেখিনি। তবে, ক্যামেরার তোলা ছবিতে দেখেছি কাঁদামাটি মাখা একজন অমায়িক ব্যবহারের অধিকারী মেজর জিয়াকে। যে ছবি কিনা এখনো ফুটে আছে আমাদের মতো লাখো-কোটি যুবকের হৃদয়ে। তার স্মৃতি ও কর্ম বারবার ফিরে আসবে আমাদের হৃদয়ে। হ্যাঁ, বলছি সেই মেজর জিয়ার কথা। যিনি ছিলেন বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রবর্তনের এক মহানায়ক। সংগ্রাম, নেতৃত্ব ও বহুগুনের অধিকারী এই (তৃতীয় বিশ্বের) অবিসংবাদিত নেতার জন্ম বগুড়ায়। তিনি শৈশবকাল গ্রামে কাটিয়েছেন। বন্ধু-বান্ধব, পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও তার গ্রামাঞ্চলের সবাই আদর-ভালোবাসা দিয়ে ডাকতেন ‘জিয়া’ বলে।

তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি ইতিহাস। স্বাধীনতার ঘোষক। তিনি জয় করেছেন দেশ এবং গণমানুষের হৃদয়। তিনি একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক, আমাদের হৃদয়ের ‘অনুভূতি’ হয়ে আছেন। বাংলাদেশের জন্ম-পূর্ব ইতিহাসের এক ক্রান্তিকালেই নিজের জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য তথা মাতৃভূতির জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। যেটি তার মৃত্যু পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। তিনি বাংলাদেশ রুপকারের একজন মহাযোদ্ধা, মহানয়ক। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান ও নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি হিসেবে ছিলেন তিনি, অতুলনীয়। ৩০ মে আমাদের প্রিয় মেজর জিয়ার ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। বাংলাদেশ ও বিশ্বের এই প্রতীকের প্রতি ‘বিনম্র’ শ্রদ্ধা।

দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার বগুড়া জেলার বাগবাড়ি গ্রামে জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি জন্ম নেন। ৩০ মে ১৯৮১ সালে তৎকালীন সেনাবাহিনীর কতিপয় অফিসারে হাতে চট্রগ্রামের সার্কিট হাউজে নির্মম আঘাতে শহীদ হন। আমিও বগুড়ার মানুষ। আমারও আবেগ-অনুভূতি রয়েছে। ঘরের মানুষের উজ্জ্বল দৃষ্টান্তগুলো তুলে ধরার অধিকার ও স্বাধীনতা রয়েছে। সেইদিক থেকে আমিও বলবো আমাদের জিয়া, মেজর জিয়া। হ্যাঁ, আমি শুরুতেই ‘মেজর’ শব্দটি দিয়ে লেখা শুরু করেছি। এবং বারবারই লিখেছি মেজর জিয়া। কারণ, ‘মেজর’ র‌্যাঙ্ক-ব্যাজ সেনা বাহিনীতে অন্যতম। আর এই শব্দ অর্থাৎ পদবীটা প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ে ‘আইকনিক’। সেইদিক থেকেও আমাদের জিয়া, আইকনিক জিয়া।

আমার পরিচয় আমরা বগুড়ার মানুষ। আর বগুড়া পেয়েছিল একজন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াকে। যিনি ছিলেন বীরউত্তম, বীর মুক্তিযোদ্ধা। ছিলেন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রবক্ত। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা। ক্যাডেট-শব্দটি যেকেউ শোনার সাথে সাথে গর্বিত অনুভব করেন। আমাদের জিয়া পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেন। আমি ছাত্র জীবনে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরে (বিএনসিসি) ছিলাম। আর এই বিএনসিসি প্রতিষ্ঠাও করেছেন আমাদের মেজর জিয়া। সবকিছু মিলে তার প্রতি আবেগ ও অনুভূতির কোন সীমা থাকে না। সীমাবদ্ধতা থাকতেও পারে না।

আমাদের জিয়ার কৃতিত্ব, কিছু আলোচনা: সেনাবাহিনী অর্থাৎ সামরিক এই বাহিনী এখনো জুড়ে রয়েছে মানুষের আস্থার প্রতীক হিসেবে। আমাদের প্রাণের জিয়া বীরত্বপূর্ণ কর্মদক্ষতা জন্য সর্বাধিক সংখ্যক বীরত্বের পুরস্কার পেয়েছেন। রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ (পরম করুণাময়, অসীম দয়াবান আল্লাহর নামে) সন্নিবেশ করার জন্য সংবিধান সংশোধন করে একটি রাষ্ট্রপতি আদেশ জারি করেন। বাংলাদেশের জনগণের একটি নতুন জাতীয় পরিচয় হিসেবে ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ প্রবর্তন করেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে বাংলাদেশের মতো একটি বহুবচন সমাজে যেখানে মানুষ বিভিন্ন জাতিসত্তার এবং যেখানে তারা বিভিন্ন ধর্ম বিশ্বাস করে, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য এবং বিভিন্ন জীবনধারা রয়েছে, সেখানে জাতীয়তাবাদকে ভাষা বা সংস্কৃতির পরিবর্তে ভূখন্ডের পরিপ্রেক্ষিতে ধারণা করা উচিত। তিনি ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। বহুদলীয় রাজনীতি , সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা, মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং জবাবদিহিতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য সামাজিক কর্মসূচিসহ গণ-সেচ এবং খাদ্য উৎপাদন কর্মসূচি শুরু করেন। পশ্চিমা বিশ্ব এবং চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নত করেন। দেশের রাজনীতিকে একটি উন্নয়নমুখী রাজনীতিতে রুপান্তর করার চেষ্টা করেন। সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে শুধু উৎপাদন নয়। এর আরও অনেক প্রভাব রয়েছে সেই কর্মসূচিগুলিকে বিপ্লব হিসাবে আখ্যায়িত করেন। বাংলাদেশে প্রথম খাল খনন কার্যক্রম শুরু করেন। এবং নিজেই সেই কর্মসূচির কাজে অংশ নেন। কৃষক এবং কৃষকদের কথা চিন্তা করে তাদের কাজে সহযোগিতা করতে মাঠে যুদ্ধে নেমে পড়েন। তিনি মনে করতেন, দেশের ক্রান্তিলগ্নে গুরুত্বপূর্ণ সেচ ব্যবস্থা চালু করলে কৃষক বাঁচবে এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। দেশের মানুষ পেটপুরে খেতে পারবেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ডান, কেন্দ্র ও বাম সকল রাজনৈতিক বর্ণের রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেন। বহু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করেন এবং দেশের বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নের জন্য অনেক দেশ সফর করেন।

জিয়া আছে হৃদয়ে: আমরা অনূভব করি আমাদের মেজর জিয়া, প্রাণ ও স্পন্দনের জিয়া হারিয়ে যাননি। তিনি আমাদের হৃদয়ের মাঝে রয়েছেন। পৃথিবী যতোদিন থাকবে-ততদিন তিনি মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।

লেখক, ইসহাক আসিফ-সাংবাদিক
(সিনিয়র রিপোর্টার, দৈনিক করতোয়া-ঢাকা অফিস)
মোবাইল নং-০১৯১৯-৭৮৩০১১


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর