বুধবার, ৪ঠা জুন ২০২৫, ২০শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • সব ধরনের চাকরির নিয়োগে বাধ্যতামূলক হচ্ছে এনআইডি
  • সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় উচ্চপর্যায়ের কমিটি হচ্ছে
  • বাস্তবমুখী মিত্যব্যয়ীতার বাজেট দেওয়া হয়েছে
  • ঈদে পরিবহনে ডাকাতি এড়াতে সবার ছবি তোলা হবে
  • ট্রাইব্যুনালে হাজির হননি শেখ হাসিনা, ১৯ জুন চূড়ান্ত শুনানি
  • জুলাই সনদে কী থাকবে তা এখনই নির্ধারণ করতে হবে
  • নগর ভবনে ইশরাক সমর্থকদের অবস্থান
  • সন্ধ্যার মধ্যে যেসব অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়ার আভাস
  • ডিসেম্বরে চালু রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র, নেপাল থেকেও আসছে ৪০ মেগাওয়াট
  • বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য থাকছে যেসব সুবিধা

বছরের শেষদিকে ইপিএ স্বাক্ষর করবে বাংলাদেশ-জাপান

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত:
৩১ মে ২০২৫, ১০:৪০

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা ঘোষণা দিয়েছেন, দুদেশ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে চলতি বছরের শেষ নাগাদ একটি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) সম্পন্ন করবে।

শুক্রবার (৩০ মে) টোকিওতে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সময় তারা এই ঘোষণা দেন।

বৈঠকে তারা দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যেকার সম্পর্কের পূর্ণ পরিসরকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং উভয় নেতা কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রতি তাদের অটল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবা বাংলাদেশকে দীর্ঘদিনের বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রচেষ্টায় জাপান বাংলাদেশের পাশে থাকবে।

শিগেরু ইশিবা অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলেন, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি নতুন যুগে প্রবেশ করবে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশের গুরুত্বও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

শিগেরু ইশিবা বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে চলতি বছরের শেষ নাগাদ দুদেশ ইপিএ সম্পন্ন করবে।

প্রধান উপদেষ্টা জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, কারণ গত দশ মাসে বাংলাদেশের ভেঙে পড়া অর্থনীতি, শূন্য কোষাগার ও সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে এমন পরিস্থিতিতে জাপান অবিচল সমর্থন দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা জাপানকে ধন্যবাদ জানাই অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারমূলক উদ্যোগকে সমর্থনের জন্য। আমরা আমাদের প্রচেষ্টায় জাপানের সক্রিয় সহায়তা ও সহযোগিতা কামনা করি।

অধ্যাপক ইউনূস যৌথ সমৃদ্ধির জন্য একটি মুক্ত, উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সমুদ্র নিরাপত্তা, চলাচলের স্বাধীনতা, সামুদ্রিক সম্পদের টেকসই ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনা, কানেক্টিভিটি জোরদার এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধ দমনে বাংলাদেশ জাপানের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে প্রস্তুত।

ড. ইউনূস ইপিএ আলোচনা এবং সাম্প্রতিক উচ্চ পর্যায়ের সফরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথাও উল্লেখ করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নিতে জাপানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সম্পৃক্ততা প্রত্যাশা করি।

তিনি মাতারবাড়িতে একটি ভূমিভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল, মহেশখালিতে একটি আমদানি নির্ভর এলপিজি টার্মিনাল নির্মাণ এবং ২০২৬ সালে এলডিসি উত্তরণের পর তিন বছরের জন্য বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার নিশ্চিতে জাপানের সমর্থন চান।

অধ্যাপক ইউনূস ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক ছয় লেন বিশিষ্ট এক্সপ্রেসওয়েতে উন্নীতকরণ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের উন্নয়ন এবং মেঘনা-গোমতী নদীর ওপর একটি নতুন চার লেনের সেতু নির্মাণের জন্য সফট লোনের আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানান, যাতে জাপানি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে অটোমোবাইল, বৈদ্যুতিক যান, হালকা যন্ত্রপাতি, উচ্চ প্রযুক্তির ইলেকট্রনিক্স ও সৌরশক্তি খাতে বিনিয়োগ করে এবং শিল্প মূল্য শৃঙ্খলে জাপানের সঙ্গে সংযুক্ত হয়।

তিনি জাপানকে বাংলাদেশ-জাপান দক্ষ শ্রমিক অংশীদারত্ব কর্মসূচি চালু করার অনুরোধ জানান, যাতে জাপানের শ্রম সংকট মোকাবিলা করা যায় এবং বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মীর চাকরির পথ সুগম হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের এবং কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষা প্রশিক্ষণ ইনস্ট্রাক্টরদের জন্য জাপানে পড়াশোনার সুযোগ বাড়ানোর অনুরোধ জানান।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যাতে তার চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে পারে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের একটি সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টা সফল হয়, সেজন্য টোকিও সহায়তা দেবে।

দুই নেতা অঞ্চলভিত্তিক ভূ-রাজনৈতিক বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন, যেখানে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তার সরকার ‘প্রতিবেশীদের সঙ্গে সর্বোত্তম সম্পর্ক’ গড়ে তোলার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে জাপানের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী ইশিবা ৩৮ বছর আগে বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করেন, যখন জাপানের সহায়তায় নির্মিত যমুনা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন হয়। তিনি অধ্যাপক ইউনূস ও তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য দূরীকরণে অবদানের প্রশংসা করেন।

শিগেরু ইশিবা বলেন, জাপানি জনগণ আপনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করে মন্তব্য করে। তিনি পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেন।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর