প্রকাশিত:
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪:৩৫
সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বর। ইতোমধ্যেই ডেঙ্গুতে অতীতের মৃত্যু ও আক্রান্তের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ডেঙ্গুতে ১৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ১৫৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক তথ্য থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট এক লাখ ২৩ হাজার ৮০৮ জন। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ৫৮ হাজার ২১ জন ও সারাদেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) ৬৫ হাজার ৭৮৭ জন।
৩১ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৫৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ৪৩৮ জন ও সারাদেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) ১৫৫ জন।
অপরদিকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট এক লাখ ৬১ হাজার ৯৬৪ জন। এর মধ্যে ঢাকাতে ৭১ হাজার ৫০৩ জন ও সারাদেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) ৯০ হাজার ৪৬২ জন।
চলতি বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৭৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকাতে ৫৪৭ জন ও সারাদেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) ২৪৩ জন।
উপরোক্ত তথ্য তুলনামূলক পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সেপ্টেম্বের মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ১৫৬ জন ও মারা গেছেন ১৯৭ জন।
আবার পুরো আগস্ট ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন সর্বমোট ৭১ হাজার ৯৭৬ জন ও মারা গেছেন ৩৪২ জন। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে সেপ্টেম্বর মাসের আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আগস্ট মাসের থেকেও বেশি হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে অব্যাহতভাবে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘটলেও যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ না করায় ডেঙ্গু ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। ইতোপূর্বে ডেঙ্গু রাজধানী কেন্দ্রিক থাকলেও বর্তমানে তা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গু রোগীদের অবস্থা খুব দ্রুত অবনতি হচ্ছে ও মারা যাচ্ছে।
জনস্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব থাকবে। হয়তো ডেঙ্গু অনেক বেশি বাড়বে না, আবার কমবেও না।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বলেন, আমাদের ডেঙ্গুর উৎস ধ্বংস করতে হবে। ডেঙ্গুর যে প্রজনন হচ্ছে সেগুলোকে যদি আমরা ধ্বংস করতে না পারি তাহলে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সম্পৃক্ত হতে হবে। প্রত্যেকটা বাড়ির মালিককে নিশ্চিত করতে হবে তার বাড়ির কোথাও কোনো পানি জমে থাকবে না। এটা যদি আমরা সবাই যার যার অবস্থান থেকে নিশ্চিত করতে পারি তাহলে এডিস মশার বংশ বৃদ্ধি কমে যাবে। বংশ বৃদ্ধি কমে গেলেই ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, অন্যথায় এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন হবে।
মন্তব্য করুন: