বৃহঃস্পতিবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৫, ১১ই বৈশাখ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • তন্ময়সহ শেখ পরিবারের ৪ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা  
  • সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের ফ্ল্যাট ও প্লট জব্দের আদেশ
  • ২৭ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
  • কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
  • সরকারি কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা যাবে তদন্ত ছাড়াই
  • ওয়ার্ড সচিব ঘুষ গ্রহণকালে হাতেনাতে গ্রেপ্তার
  • নির্বাচন কমিশন সংস্কারের দিকে তাকিয়ে থাকবে না
  • পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে দোহা থেকে রোমে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • আইসিটির দুর্নীতি তদন্ত ও শ্বেতপত্র প্রণয়নে টাস্কফোর্স
  • তুরস্ক ও আমিরাত সফরে প্রধান বিচারপতি

চাল সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ, আটাও অপ্রতুল

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত:
১৪ জুন ২০২৩, ১৪:১৮

দিনাজপুরে ওএমএসের আটা নিতে নারীদের দীর্ঘ সারি। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের কালিতলা এলাকায় ডিলার পয়েন্টে

সকাল সাতটাত ডিলারের গোরত আইচ্ছু। কামোত যাবার পার নাই। ছবি ও ভোটার আইডি কার্ড নিয়া আইচ্ছু। সাড়ে এগারোটাত হামাক কহিল আটা শেষ হই গেইছে। দুই দিন ঘুরিয়াও আটা পাইনুনা, চালতো দেয় এ না।’ গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় দিনাজপুর শহরের কালিতলা এলাকায় ওএমএস সেন্টারে আটা কিনতে না পেরে কথাগুলো বলছিলেন রাধারানী রায় (৫০)।

 

রাধারানী বাসাবাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। তিন দিন কাজে যাননি। আটা কিনতে এসে তাও কেনা হয়নি। ফলে দুই দিকে লোকসানে পড়েছেন। শুধু রাধারানীই নন, গতকাল তাঁর মতো অর্ধশতাধিক উপকারভোগী আটা কিনতে না পেরে ফিরে গেছেন। সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে তাঁরা বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরলেন। রেলবাজারহাট এলাকা থেকে এসেছেন ববি আক্তার (৩৫)। স্বামী নেই। ছেলে ও মাকে নিয়ে সংসার। স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কাজ করেন। ববি বলেন, গতকালও (সোমবার) এসেছি। রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে ছেলেটা বমি করেছে। পরে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি গেছি। আজ (গতকাল) সকাল আটটায় আসছি। তাও আটা কিনতে পারলাম না।’

 

 

দিনাজপুর পৌরসভায় খাদ্য অধিদপ্তরের ওএমএসের ডিলার রয়েছে ১৭ জন। ১২টি ওয়ার্ডে ১২ জন ডিলার থাকলেও জনসংখ্যা বিবেচনায় নতুন ৫ জন ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। সপ্তাহের ৫ দিন ১২টি স্থানে ১২ টন চাল ও ১২ টন আটা বিক্রির কার্যক্রম চলে। ১ জুন থেকে বন্ধ আছে চাল বিক্রি কার্যক্রম। কয়েকজন উপকারভোগী জানান, চাল বিক্রি বন্ধ থাকায় আটার চাহিদাও বেড়েছে কয়েকগুণ। আটা কিনতে না পেরে প্রতিটি স্থান থেকে শতাধিক মানুষকে ফেরত যেতে হচ্ছে। তবে খাদ্য বিভাগ বলছে, আগামী আগস্টের আগ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে চালের বরাদ্দ।

 

কালিতলা এলাকায় ওএমএসের ডিলার মাসুদ রানা। গতকাল সকাল ৯টার তিনি আটা বিক্রি শুরু করেন। ১১টা ৩৭মিনিটে তাঁর বরাদ্দ দেওয়া ১ টন আটা বিক্রি শেষ হয়। তখনো লাইনে দাঁড়ানো ছিলেন ৪৭ জন নারী ও ৪ জন পুরুষ। ৯টা ৪৫মিনিট থেকে টানা ২ ঘণ্টা ডিলার পয়েন্টে অবস্থান করে দেখা যায় ২টি লাইনে নারী–পুরুষের উপচে পড়া ভিড়। প্রত্যেকের হাতে ছবিযুক্ত ভোটার আইডি কার্ড। আলাপচারিতায় জানান, কেউ কেউ ভোর পাঁচটায় এসে লাইনে ব্যাগ কিংবা কোন কিছু চিহ্ন রেখেছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ওএমএসের লাইন। চাহিদার সাথে বরাদ্দের অসামঞ্জস্য থাকায় অবশেষে শূন্য ব্যাগ নিয়েই ফিরতে হয় অনেককে।

 

ডিলার মাসুদ রানা বলেন, প্রত্যেকটি ভোটার আইডি কার্ডের বিপরীতে পাঁচ কেজি চাল, পাঁচ কেজি আটা বরাদ্দ ছিল। কিছুদিন চালের বরাদ্দ বন্ধ। বরাদ্দ কম থাকায় পাঁচ কেজির বদলে আটাও বিক্রি করছি চার কেজি করে। কোনো দিন এমন ভিড় থাকে, একজনের বরাদ্দ দুজনকে দিতে হয়। প্রতিটি স্থানে অবস্থা বিবেচনায় বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন।

 

 

 

দিনাজপুর সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিপ্লব কুমার সিংহ বলেন, এই কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনা ও প্রকৃত উপকারভোগীরা যেন এর সুবিধা পায়, সে জন্য ওএমএস কার্ড কার্যক্রম চলছে। পৌর শহরের ১৭ জন ডিলার প্রত্যেকে ১ হাজার ২৫০টি হারে মোট ২১ হাজার ২৫০ পরিবারকে ওএমএস কার্ড করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেবেন। ইতিমধ্যে পাঁচটি ডিলার পয়েন্টে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যাচাই–বাছাই করে চূড়ান্ত ব্যক্তিকে কার্ডের আওতায় আনা হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি অন্য কোনো কর্মসূচিতে থাকা ব্যক্তি ওএমএস থেকে বাদ যাবেন।

 

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কামাল হোসেন বলেন, খাদ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী আপাতত চাল বিক্রয় কার্যক্রম বন্ধ আছে। আগামী আগস্টে চাল বিক্রি শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওএমএস কার্যক্রমে কিছু নতুন নিয়ম করার কাজ চলছে, সে জন্য হয়তো অধিদপ্তর চাল বিক্রি বন্ধ রেখেছে।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর