শুক্রবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৫, ১২ই বৈশাখ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • তন্ময়সহ শেখ পরিবারের ৪ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা  
  • সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের ফ্ল্যাট ও প্লট জব্দের আদেশ
  • ২৭ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
  • কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
  • সরকারি কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা যাবে তদন্ত ছাড়াই
  • ওয়ার্ড সচিব ঘুষ গ্রহণকালে হাতেনাতে গ্রেপ্তার
  • নির্বাচন কমিশন সংস্কারের দিকে তাকিয়ে থাকবে না
  • পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে দোহা থেকে রোমে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • আইসিটির দুর্নীতি তদন্ত ও শ্বেতপত্র প্রণয়নে টাস্কফোর্স
  • তুরস্ক ও আমিরাত সফরে প্রধান বিচারপতি

আন্দোলন ঠেকাতে গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল, অভিযোগ শিক্ষকদের

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত:
২৩ জুলাই ২০২৩, ১৬:৪২

দেশের মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ (সরকারিকরণ) বৈষম্য দূরীকরণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চলা শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। ১২তম দিনের মতো তাদের এই আন্দোলন চলছে।

 মঙ্গলবার (১১ জুলাই ) শিক্ষকরা আন্দোলন শুরু করেন। 

রোববার (২৩ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সরেজমিনে এই দৃশ্য দেখা গেছে। সেখানে দেখা যায়, শিক্ষকরা সেখানে অবস্থান নিয়েছেন। দাবির পক্ষে শিক্ষক নেতারা স্লোগান দিচ্ছেন, যুক্তি দিচ্ছেন, অভিযোগ জানাচ্ছেন।

জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকরা যখন রোদে পুড়ে-বৃষ্টিতে ভিজে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন, ঠিক এই সময়ে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গ্রীষ্মকালীন ছুটির আদেশ দিয়েছে। 

আন্দোলনরত শিক্ষকদের অনেকে বলছেন, আন্দোলন থেকে তাদের সরিয়ে দিতেই ছুটি বাতিলের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ১৯ জুলাই আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী এই ছুটি বাতিলের কথা জানান।

পরদিন ২০ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব সাইদুর রহমান খানের সই করা আদেশে ছুটি বাতিল করা হয়। তাতে বলা হয়, ২০ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত এ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাধ্যমিক, দাখিল, উচ্চ মাধ্যমিক, আলিম এবং কারিগরি, সমমান পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল করা হলো। 

ছুটি বাতিলের কারণ হিসেবে আদেশে বলা হয়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা কার্যক্রম যথাসময়ে সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আগের দিন শিক্ষামন্ত্রীও এ কথা জানিয়েছিলেন। তবে এই কারণ মানতে নারাজ শিক্ষকরা। 

নারায়ণগঞ্জ থেকে অবস্থান কর্মসূচিতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, আমাদের গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল করা হলো। কেন? আমরা বিশ্বাস করতে চাই না। এই ছুটি বাতিল আমাদের আন্দোলনকে দমানোর জন্য বলে মনে করি। আমরা যাতে শ্রেণিকক্ষে ফেরত যাই। কিন্তু, সেটি হবে না। আমরা আমরণ আন্দোলন চালিয়ে যাব।

ফরিদপুরের বাইতুল মোকাদ্দাস ইনস্টিটিউটের শিক্ষক মো. খলিলুর রহমান বলেন, আমরা মূলত বৈষম্যের শিকার। এক হাজার টাকা আমরা বাড়িভাড়া পাই, সরকারি শিক্ষকরা পান মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ। আমরা চিকিৎসা ভাতা পাই ৫০০ টাকা, আর সরকারি শিক্ষকরা অনেক বেশি পান। ঈদ বোনাস নিয়েও এই বৈষম্য আছে। এই বৈষম্য দূরীকরণ ও জাতীয়করণের দাবিতেই আমাদের আন্দোলন। 

ফরিদপুর থেকে আসা আরেক শিক্ষক বলেন, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত আমরা মানছি না। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস নেব না।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওসার আহমেদ বলেন, যত দিন পর্যন্ত মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের ঘোষণা না আসবে, তত দিন পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

এর আগে ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিলের ঘোষণা দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি পরে সাংবাদিকদের বলেন, চলতি বছর শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই আগে ভাগে শিক্ষাবর্ষের কাজ শেষ করতে হবে। 

তিনি বলেন, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নতুন শিক্ষাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠদান ও মূল্যায়ন ও অন্যান্য শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হবে। তাই গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল করা হয়েছে। শীতের ছুটির সঙ্গে তা সমন্বয় করা হবে। ২ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রীষ্মকালীন ছুটি ছিল, সেটি এখন আর হচ্ছে না।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে (জাতীয়করণ) আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। তবে জাতীয়করণের যৌক্তিকতা আছে কি নেই, সেটাসহ শিক্ষা, শিক্ষকদের সার্বিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে দুটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। গবেষণাভিত্তিক এ দুই কমিটির প্রতিবেদনের পর এ নিয়ে পরবর্তী সময়ে করণীয় ঠিক করা হবে।

কিন্তু পরে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে জানান, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে আলোচনা ‘ফলপ্রসূ হয়নি’। পরদিন শিক্ষকরা জানান, তারা তাদের দাবি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরতে চান।   


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর