বুধবার, ১৪ই মে ২০২৫, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • গরুর দেশীয় জাত হারানোর বিনিময়ে আধুনিক জাত দরকার নাই
  • এনবিআর বিলুপ্তিতে কর্মকর্তাদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই
  • চিকিৎসার নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর সরকার
  • ধার করে, টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করবো না
  • ২ জনের যাবজ্জীবন, ৯ জনের ১০ বছর জেল
  • পররাষ্ট্রসচিবসহ ৬ জনের সদস্যপদ স্থগিত করল অফিসার্স ক্লাব
  • চিকিৎসকদের জন্য সুখবর, বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব
  • সারাদেশে এনআইডি সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ
  • সরকারপ্রধান হিসেবে প্রথমবার নিজ এলাকায় যাচ্ছেন ড. ইউনূস
  • শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় ১৭ মে

বাসে ইবি ছাত্রীর সাথে অশালীন আচরণ, থানায় মুচলেকা দিয়ে মুক্তি

ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত:
১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:১৩

কুষ্টিয়া শহর থেকে ক্যাম্পাসে আসার পথে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি ঝিনাইদহ জেলার আরাপপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পশ্চিম পাড়ার মৃত মোঃ সিরাজুল ইসলামের ছেলে জুয়েল আহমেদ রাজু (৪৫)।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সোয়া ৭টার দিকে কুষ্টিয়া থেকে খুলনাগামী রূপসা বাসে ঘটনাটি ঘটে। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মানবিক দৃষ্টিতে ক্ষমা করে দেওয়ায় ইবি থানা কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তকে মুচলেকা নিয়ে মুক্তি দেয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ছাত্রী রূপসা বাসে ক্যাম্পাসে ফেরার সময় পাশের সীটে অভিযুক্ত ব্যক্তি বসছিল। ঐ ছাত্রীকে বিভিন্ন প্রশ্ন করা-সহ মুখের মাস্ক খুলতে বলা, টিকিট দেখাতে বলা, হাতের আন্টি (রিং) ধরতে চাওয়া এবং ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে নেমে মেয়েটিকে অনুসরণ করে উত্ত্যক্ত করছিল অভিযুক্ত ব্যক্তি রাজু। পরে ভুক্তভোগীর কয়েকজন বন্ধু ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তকে মারতে উদ্যত হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারির উপক্রমায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা গিয়ে অভিযুক্তকে উদ্ধার করে থানায় হস্তান্তর করে।

পরে রাত ১২ টায় থানায় মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পান অভিযুক্ত ব্যক্তি রাজু। মুচলেকা পত্রে বলা হয়, ‘আমি মোঃ রেজাউল ইসলাম ঝন্টু (৫৪) পিতাঃ মৃত মনোয়ার হোসেন, সাং-৭২ আরাপপুর পশ্চিমপাড়া ৮নং ওয়ার্ড, ঝিনাইদহ পৌরসভা, থানা ও জেলা: ঝিনাইদহ, এই মর্মে অঙ্গীকার করছি যে, আমার মেজো ভাইয়ের ছেলে- মোঃ জুয়েল আহমেদ রাজু (৪৫) পিতা: সিরাজুল ইসলাম (মৃত), সাং-৭২ আরাপপুর পশ্চিমপাড়া ৮নং ওয়ার্ড, ঝিনাইদহ পৌরসভা, থানা ও জেলাঃ ঝিনাইদহ। অদ্য ৭টা ১৫ ঘটিকার সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের জনৈক ছাত্রীর সাথে অশালীন আচরণ করায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়ে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা তাকে থানায় হস্তান্তর করে। এরপর মানবিক দিক বিবেচনায় ভুক্তভোগী তাকে ক্ষমা করে দেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে থানা কর্তৃপক্ষ আমাকে খবর দিলে আমি বিস্তারিত জানতে পারি। আমি আমার ভাতিজার এহেন আচরণের জন্য ভুক্তভোগী-সহ ইবি প্রশাসনের নিকট ক্ষমা পার্থনা করছি। সেইসাথে আমি আরও আঙ্গীকার করছি যে, আমার বাতিজা পরবর্তীতে আর বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর আশেপাশের এলাকায় আসবে না। যদি আসে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমার ভাতিজার বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, আমি তা মেনে নিতে বাধ্য থাকবো এবং তার বিরুদ্ধে গৃহীত আইনানুগ ব্যবস্থার গ্রহণের বিরুদ্ধে আমি ও আমার পরিবারের কোনো আপত্তি থাকবে না।’

অভিযুক্ত রাজু বলেন, আমার টিকিটটা খুঁজে পাচ্ছিলাম না, মেয়ের হাতের টিকিটটা আমার মনে হয়েছিল তাই টিকিট দেখাতে বলছি। মেয়েটা যখন বাস থেকে নেমেছে তখন জিনিসপত্রের ব্যাগটা খুব ভারী হওয়ায় সন্দেহ লাগছিল তাই জিজ্ঞেস করছি। মেইনগেইটে নামলে কয়েকজন এসে মারে। এতে নো প্রবলেম।

টিকিট চেক করা কিংবা সন্দেহ করার ক্ষমতা রাখেন কিনা জিজ্ঞেস করলে বলেন, এটাই আমার ভুল হয়েছে। আল্লাহকে বিচার দিলাম। আমি সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি- আর এরকম করব না এবং এখানেও আসব না।

ইবি থানা থেকে জিম্মায় নিতে আসা অভিযুক্ত ব্যক্তির চাচা ঝন্টু জানান, মা-বাবা স্ত্রী হারিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে গেছে। বছরে ১৫ থেকে ২০ দিন মাতাল হয়ে যায়। বেঁধে রাখতে হয়। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব বেঁধে রেখে কিংবা ভালো মানের চিকিৎসা করাতে।

ইবি থানার এসআই মেহেদী হাসান জানান, শিক্ষার্থীরা তাকে থানায় হস্তান্তর করলে বিস্তারিত ঘটনা জেনেছি। ভুক্তভোগী কোনো লিখিত অভিযোগ না দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে মুচলেকা নিয়ে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, মেয়ে যেহেতু অভিযোগ দেয়নি, সুতরাং ক্ষমা করে দিয়েছে। থানায় বিষয়টা অবহিত করে তাদের আইনী নিয়মানুসারে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে বলছিলাম। থানা থেকে যখন বললো ‘অভিযোগ না পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া যায় না, বরং মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিতে হয়’। তাই বললাম যে তাহলে অভিভাবক ডেকে মুচলেকা নিতে।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর