প্রকাশিত:
১৫ মার্চ ২০২৫, ১৬:৫৬
স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক শনিবার জানিয়েছেন, তাদের বৃহৎ রকেট স্টারশিপ ২০২৬ সালের শেষের দিকে মঙ্গলের উদ্দেশে রওনা হবে এবং এর সঙ্গে থাকবে টেসলার মানবাকৃতির রোবট অপটিমাস। তিনি আরো বলেন, সফল অবতরণ হলে ২০২৯ সালেই মানব মিশন শুরু হতে পারে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে মাস্ক বলেন, ‘স্টারশিপ আগামী বছরের শেষের দিকে মঙ্গলে যাত্রা করবে, সঙ্গে থাকবে অপটিমাস। যদি এসব অবতরণ সফল হয়, তবে ২০২৯ সালেই মানব মিশন শুরু হতে পারে, যদিও ২০৩১ সালকে বেশি সম্ভাব্য সময় বলে মনে হচ্ছে।’
টেসলার প্রধান নির্বাহী মাস্ক গত বছর এক অনুষ্ঠানে অপটিমাস রোবট প্রদর্শন করেন। তিনি বলেন, একসময় এই রোবটগুলো সাধারণ কাজের পাশাপাশি বন্ধুত্বও দিতে পারবে এবং এগুলোর দাম ২০ থেকে ৩০ হাজার মার্কিন ডলারের মধ্যে হতে পারে।
দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী রকেট স্টারশিপই মঙ্গলগ্রহে উপনিবেশ স্থাপনের মাস্কের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার প্রধান চাবিকাঠি। স্ট্যাচু অব লিবার্টির চেয়ে প্রায় ১০০ ফুট বেশি উঁচু ৪০৩ ফুট দীর্ঘ স্টারশিপ সম্পূর্ণ পুনঃব্যবহারযোগ্য করার পরিকল্পনা রয়েছে।
মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসাও তাদের আর্টেমিস কর্মসূচির জন্য স্টারশিপের পরিবর্তিত সংস্করণ চায়, যা এই দশকেই চন্দ্রাভিযানে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তবে এসব অভিযানের আগে স্পেসএক্সকে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে, স্টারশিপ নির্ভরযোগ্য, মানুষের জন্য নিরাপদ ও মহাকাশে জটিল কক্ষপথে জ্বালানি ভরার সক্ষমতা রাখে, যা গভীর মহাকাশ অভিযানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ব্যর্থতা ও চ্যালেঞ্জ
এদিকে চলতি মাসের শুরুর দিকে স্পেসএক্সের স্টারশিপ প্রোটোটাইপের সর্বশেষ পরীক্ষামূলক ফ্লাইটটি বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেষ হয়, যদিও বুস্টার সফলভাবে কক্ষপথে প্রবেশ করেছিল। এটি ছিল আগের প্রচেষ্টার প্রায় পুনরাবৃত্তি।
উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পর এবং বুস্টার বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর লাইভ ভিডিওতে দেখা যায়, স্টারশিপের ওপরের অংশ অনিয়ন্ত্রিতভাবে ঘুরতে থাকে, এরপর সংকেত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ছাড়া অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া দৃশ্যমান ফুটেজে দেখা যায়, বাহামা দ্বীপপুঞ্জের আকাশে লালচে আগুনের গোলা বৃষ্টি হচ্ছে।
এটি ছিল স্টারশিপের অষ্টম মানববিহীন কক্ষপথ পরীক্ষামূলক ফ্লাইট। মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জানিয়েছে, স্পেসএক্সকে নতুন করে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমোদন পেতে হলে ব্যর্থতার তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে। তবে এই ব্যর্থতার পরও স্পেসএক্সের ‘দ্রুত ব্যর্থ হও, দ্রুত শিখো’ নীতিই প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মহাকাশ উৎক্ষেপণ সেবাদাতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
রাজনৈতিক প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে মাস্কের ভূমিকা ও তার ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রকদের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। জো বাইডেনের প্রেসিডেন্ট থাকার সময় মাস্ক বারবার এফএএর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন এবং স্পেসএক্সের ওপর অতিরিক্ত নিরাপত্তা ও পরিবেশগত বিধি-নিষেধ আরোপের অভিযোগ তুলেছেন। তবে জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ‘আমরা মঙ্গলে মার্কিন পতাকা ওড়াব।’
মন্তব্য করুন: