শুক্রবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৫, ১১ই বৈশাখ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল nagorikdesk@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • তন্ময়সহ শেখ পরিবারের ৪ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা  
  • সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের ফ্ল্যাট ও প্লট জব্দের আদেশ
  • ২৭ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
  • কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
  • সরকারি কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা যাবে তদন্ত ছাড়াই
  • ওয়ার্ড সচিব ঘুষ গ্রহণকালে হাতেনাতে গ্রেপ্তার
  • নির্বাচন কমিশন সংস্কারের দিকে তাকিয়ে থাকবে না
  • পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে দোহা থেকে রোমে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • আইসিটির দুর্নীতি তদন্ত ও শ্বেতপত্র প্রণয়নে টাস্কফোর্স
  • তুরস্ক ও আমিরাত সফরে প্রধান বিচারপতি

প্রধান উপদেষ্টার জরুরি বৈঠক

মার্কিন পণ্যে কমছে শুল্ক

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত:
৬ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৬

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধির খড়গ নামাতে আমদানি বাড়িয়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যঘাটতি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এজন্য মার্কিন পণ্যে শুল্ক ছাড়, আমদানি-নীতি সংশোধন, বাণিজ্যে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূর করাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মার্কিন প্রশাসন ও দেশের বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলোচনা করে দু-এক দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে অবস্থানপত্র তৈরি করা হবে। এরপর শুল্ক বৃদ্ধির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানাবে বাংলাদেশ।

গতকাল (৫ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে এক জরুরি বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত আসে। গত বুধবার (বাংলাদেশি সময় বুধবার দিবাগত রাত ২টা) হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন করে শুল্ক ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই ঘোষণায় বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করা হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশি পণ্যে এতদিন গড়ে ১৫ শতাংশ করে শুল্ক ছিল। এতে শঙ্কায় পড়েছেন পোশাক খাতসহ দেশের অন্যান্য রপ্তানি খাতের ব্যবসায়ীরা। এর প্রেক্ষিতে শুল্ক ইস্যু নিয়ে ব্যবসায়ী ও রপ্তানি খাতের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনার জন্য বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীকে নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। গতকাল সকাল থেকে চলে সেই আলোচনা।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আলোচনা থেকে আসা সুপারিশ নিয়ে সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশিরউদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বিডার নির্বাহী আশিক চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, প্রধান উপদেষ্টা মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া, প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, অর্থ সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান, বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) চেয়ারম্যান জাইদী সাত্তার উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুনিয়াব্যাপী শুল্ক আরোপ করেছে। দেশভিত্তিক তাদের বাণিজ্যঘাটতির হিসাব করে বিভিন্ন দেশের ওপরে পৃথক শুল্ক আরোপ করেছে। আমরা এখানে সম্ভাবনাও দেখছি। বাণিজ্যঘাটতি কমিয়ে আমরা প্রতিযোগী দেশগুলো থেকে ভালো অবস্থানে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আমদানি বৃদ্ধির মাধ্যমেই আমরা বাণিজ্যঘাটতি কমাব। আমরা সয়াবিন তেল, তুলা, মেটাল স্ক্রাপ, শিল্পপণ্য, যন্ত্রাংশ, জ্বালানি পণ্য বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করি। এসব আমদানির ক্ষেত্রে আমাদের অর্থনীতির জন্য যেটা ভালো আমরা সেটা করব। তিনি আরও বলেন, আমাদের ধারণা যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব না। এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোর শুল্কও বেড়েছে। আমাদের থেকে শুল্ক কম আছে ভারত ও পাকিস্তানের। তাতে সমস্যা হবে না। অ্যাপারেল সেক্টরে আমাদের পণ্য ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বৈচিত্র্যময়। আমাদের শিল্পের অবয়ব অনেক বেশি ম্যাচিউরড। এটা আরও সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। এ ক্ষেত্রে আমরা উনার আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতাকে ব্যবহার করতে পারব।

এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, শুল্ক নিয়ে আমরাই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সবার আগে যোগাযোগ করেছি। ট্রাম্প প্রশাসন আসার পরেই প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টা অনুভব করেছিলেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা আমাদের আমদানি-নীতি সংশোধন করেছি। এতে বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ নিয়ে যে অবজারভেশন দিয়েছে, সেটার বিবেচনায় তাদের যে যে আকাঙ্ক্ষা ও আমাদের চাহিদাগুলোকে সমন্বয় করলে বাণিজ্য বাড়বে। ড. খলিলুর রহমান বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা আমাদের প্রতিক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব। আমার সঙ্গে কয়েকদিন আগেও আমেরিকার ডেপুটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজরের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাকে জানিয়ে রেখেছি। ধারণা করছি বিষয়টা রিভিউয়ের জন্য অনুরোধ করলে ইতিবাচক সাড়া পাব।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণায় বলা হয়েছে, ৯ তারিখে শুল্ক বাস্তবায়ন হবে। এর মধ্যে আমরা সবদিক বিবেচনা করে, সবার সঙ্গে আলাপ করে আমাদের অবস্থানপত্র তৈরি করব। আগামী এক-দুই দিন আমেরিকার প্রশাসন ও আমাদের বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা একটা সিদ্ধান্তে যাওয়ার চেষ্টা করব।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর