প্রকাশিত:
১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৩:০৫
গত বছরই ভারতের মুম্বাইয়ে নিজের নতুন রেস্তোরাঁ উদ্বোধন করেছেন বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের স্ত্রী গৌরী খান। রেস্তোরাঁটির নাম রেখেছেন ‘তোরি’।
রেস্তোরাঁটির ভেতরে ঢুকলে তার বিলাসবহুল অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জায় মুগ্ধ হতে বাধ্য হবেন যে কেউ! এই রেস্তোরাঁয় প্রায়ই বলিউডের খ্যাতনামা তারকাদের আনাগোনা চোখে পড়ে। তবে অতি সম্প্রতি নেতিবাচক খবরের কারণে শিরোনামে গৌরী খানের ‘তোরি’।
ভারতের একজন প্রভাবশালী সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার দাবি করেছেন, গৌরীর রেস্তোরাঁয় নাকি ‘নকল’ পনির পরিবেশন করা হচ্ছে। আর তার এমন অভিযোগের কারণেই সমালোচনার মুখে পড়েছে ‘তৌরি’।
হিন্দুস্তান টাইমস-এর এক প্রতিবদনে বলা হয়েছে, প্রভাবশালী ওই সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার এবং ইউটিউবার সার্থক সচদেব গৌরী খানের ‘তোরি’ সহ একাধিক তারকার রেস্তোরাঁয় গিয়ে খাবার খেয়েছেন। আর সমস্ত রেস্তোরাঁতে গিয়েই তিনি চেক করেছেন, সেখানকার পনির আসল নাকি নকল। সেই সব ভিডিও তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
ওই ইউটিউবারের অভিযোগ, ‘তোরি’-তে স্টার্চযুক্ত পনির পরিবেশন করা হয়েছিল, যা তার করা পরীক্ষা অনুসারে ভেজালের একটি চিহ্ন। ভিডিওতে, সার্থক রেস্তোরাঁয় পরিবেশিত পনিরের একটি টুকরোতে আয়োডিন ড্রপ দিয়ে পরীক্ষা করেন। এই পরীক্ষা, যা সাধারণত স্টার্চের উপস্থিতি সনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়।
সেখানে দেখা যায় আয়োডিনের স্পর্শে পনির কালো এবং নীল হয়ে যায়। রঙ পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায় সার্থক ঘোষণা করেন, ‘শাহরুখ খানের স্ত্রী গৌরী খানের রেস্তোরাঁয় পনির নাকলি থা। ইয়ে দেখ কে মেরে তো হোশ উদ গয়ে থে।’
ওই ভিডিওতে সার্থক সচদেব-কে মুম্বাইয়ের বেশ কয়েকজন সেলিব্রিটির মালিকানাধীন রেস্তোরাঁ পরিদর্শন করতে দেখা যায়। যার মধ্যে ছিল বিরাট কোহলির ওয়ান-৮ কমিউন, শিল্পা শেঠির ‘বাস্তিয়ান’ এবং ববি দেওলের ‘সামপ্লেস এলস’। সব জায়গাতেই পরিবেশিত পনিরের মান পরীক্ষা করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার সার্থক একইভাবে আয়োডিনের কয়েক ড্রপ ফেরে পনিরগুলো পরীক্ষা করেন। যদিও বিরাট, শিল্পা কিংবা ববি দেওলের রেস্তোরাঁর কোনো পনিরের নমুনাই কালো হয়নি, যা আসলে স্টার্চের অনুপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়।
এদিকে সার্থক সচদেবের এই ভিডিও নেটদুনিয়ার চর্চার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এরপরই ‘নকল পনির’ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে গৌরীর রেস্তারঁ ‘তোরি’। ভিডিওটির নিচে কমেন্ট করে রেস্তোরাঁটি লেখে ‘আয়োডিন পরীক্ষা স্টার্চের উপস্থিতি প্রতিফলিত করে, পনির আসল নাকি নকল সেটা প্রমাণ করে না। যেহেতু ওই থালাটিতে সয়া-ভিত্তিক উপাদান ছিল, তাই পরীক্ষার এই ফলাফল প্রত্যাশিত। আমরা আমাদের তোরি-তে বিশুদ্ধ পনির-ই পরিবেশন করি।’
এদিকে ‘তোরি’-কর্তপক্ষের দাবির উত্তরে সার্থক সচদেব পাল্টা লেখেন, ‘তাহলে কি এখন আমাকে ওখানে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে? তবে আপনাদের খাবার অসাধারণ ছিল’।
এদিকে গ্রেটার নয়ডার যথার্থ হাসপাতালের পুষ্টি ও স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. কিরণ সোনি HT লাইফস্টাইলকে এর আগে বলেছিলেন, ‘যে আয়োডিন ড্রপ দিয়ে পরীক্ষা স্টার্চ শনাক্ত করতে পারে, তবে এটা প্রমাণ করে না যে পনির আসল নাকি নকল। তবে যেহেতু খাঁটি পনির দুধের প্রোটিন থেকে তৈরি এবং এতে প্রাকৃতিকভাবে স্টার্চ থাকে না, তাই রঙ পরিবর্তনের ফলে আয়োডিন পরীক্ষা কৃত্রিম বা ভেজাল পনিরের উপস্থিতি নির্দেশ করতে পারে।’
ডা. সোনি আরও উল্লেখ করেন যে, ‘বাণিজ্যিক পনির উৎপাদকরা কখনো কখনো পনিরের গঠন বা ওজন বাড়ানোর জন্য স্টার্চ যোগ করেন। তাছাড়া, ব্যাটার লেপ বা সয়া-ভিত্তিক উপাদানগুলোও আয়োডিন পরীক্ষার ফলাফলকে বিকৃত করতে পারে’।
মন্তব্য করুন: