প্রকাশিত:
২১ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৩৯
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্নবতান-ইবি পরিসর’ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী চলছে বৈশাখীয়ানা উৎসব। মেলার নির্দিষ্ট সীমানায় প্রবেশ করলেই অনির্দিষ্ট সংখ্যক চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে আয়োজকদের বিরুদ্ধে। নির্দিষ্ট স্টলের বাহিরে ভ্রাম্যমাণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে ২৫০ থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত দাবি করছে বলে জানা গেছে।
গতকাল রবিবার (২০ এপ্রিল) থেকে শুরু হওয়া দুইদিনব্যাপী চলমান বৈশাখীয়ানা মেলায় এসব অভিযোগ করে আসছে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা।
জানা যায়, ২২ টি স্টলে ভর্তুকি বাবদ ৭০০ টাকা করে নির্ধারিত চাঁদা নিয়েছে আয়োজক কমিটি। তবে অভিযোগ ওঠেছে- স্টলের বাহিরে যারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা যেমন বেলপুরি, সরবত ও কুলফি বিক্রেতার কাছ থেকেও স্টল না দিয়ে চাঁদা নেয় আয়োজকরা।
কুলফি বিক্রেতা মুন্না ইসলাম বলেন, মামা দেখেন, “আমি শিলাইদহের কুটিবাড়ী থেকে আসলাম। আমি ভাইরাল মানুষ, অনলাইন দেখেন খুঁজে পাবেন। আমি জানতাম না এখানে চাঁদা নেয়। এই যে গাড়ি ভাড়া এবং দিনে হাজার খানেক বিক্রি হয়, ৫০০ টাকা চাঁদা নিয়ে নিলো। আমি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেমন ডেফোডিল ও জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়েও দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি করে আসছে। উল্টো তারা কল দিয়ে ঢেকে নেয়। কিন্তু এই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার কাছ থেকে টাকা নিলো।”
তিনি আরও বলেন, “আমি মূলত মার্কেটিং করতে আসছি। শিক্ষার্থীরা যখন কুটিবাড়ী ঘুরতে যাবে তখন আমারে চিনবে, জানবে, কিনবে। পরিচিত হওয়ার লক্ষ্যে এখানে আসা।”
বেলপুরী বিক্রেতা আল আমিন বলেন, “আমি স্টল নেয়নি তাও ২৫০ টাকা নিয়েছে। শুনেছি দঁড়ির ভিতরে আসলে টাকা দিতে হয়।”
শরবত বিক্রেতা আনোয়ার বলেন, আমার কাছ থেকে ৬০০ টেহা দাবি করছে, “আমি ৭০০ মতো বেইচি (বিক্রি)। এখান তারা কোনো মতেই মানবে না নাকি। কেন এত টেহা জিজ্ঞেস করছিলাম, তো আয়োজকরা বলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নাকি ৪০০ টেহা দেয়া লাগবে তাদের।”
ডায়না চত্বরে অবস্থান করা এক শরবত বিক্রেতা বলেন, “মামা ঐ যে মেলার মেইন গেইটের সামনে গেলেই টেহা খুঁজে। তাই দূরে আছি।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মেলায় দায়িত্বে থাকা স্বপ্নবিতান ইবি পরিসরের আহ্বায়ক আরিফা ইসলাম ভাবনা বলেন, “আমাদের এখনও অনেক ভর্তুকি দিতে হয়েছে। স্টলে নির্ধারিত ফি ৭০০ করে নেয়া হয়েছে। দেখা গেল যে, মেলার গেইটের সামনে যত্রতত্র ক্ষুদ্র বিক্রেতারা জড়ো হওয়ায় মেলার সৌন্দর্য ও অন্যরকম পরিবেশ তৈরি হচ্ছিল। তাই প্রক্টরের সাথে কথা বলে নির্দিষ্ট এরিয়ার বাহিরে থাকার জন্য বলেছিলাম। যারা ভিতরে আসবে তাদের ব্যবসার অবস্থান দেখে চাঁদা চার্জ করা হয়। কারণ যারা মেলায় স্টল নিয়েছে তারাও বলবে যে ওদেরকে ফ্রি করলেন কেন! উভয় সংকটের মতো। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি শিক্ষার্থীদের উৎসবমুখর পরিবেশ উপহার দিতে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, “চাঁদার নিয়ে আমাদের সাথে কোনো সম্পর্ক নাই। প্রশাসন এখানে ইনভলভ না। সেটা হয়তো এস্টেট অফিস জানতে পারবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট প্রধান আলাউদ্দিন জানান, “আমরা এসব জানি না। শুনেছি বাংলা বিভাগের সহযোগিতা নিয়ে শিক্ষার্থীরা আয়োজন করছে।”
মন্তব্য করুন: